এ পর্যন্ত ৭টি করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে । তার মধ্যে ৪টি করোনা ভাইরাস সাধারণ জ¦র, সদির্, কাশি, গলা ব্যথা (কমন কোল্ড) হয়। শীতকালে প্রায় ঘরে ঘরে এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ৫-৭ দিনে এমনিতে ভাল হয়ে যায়। এই ৪টি ভাইরাস হলোঃ ২২৯ ই (আলফা করোনা ভাইরাস); এনএল৬৩ ( আলফা করোনা ভাইরাস); ওসি৪৩ ( বেটা করোনা ভাইরাস); এইচকে ইউ ওয়ান ( বেটা করোনা ভাইরাস)।
এ ছাড়াও আরও দুটি করোনা ভাইরাস খুব সাম্প্রতিককালে মানুষে সংক্রমন করেছে, এর মধ্যে একটি হলো- সার্স ( সেভারে একিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রম) যা ২০০৩-২০০৪ সালে প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটে। মোট ৩০টি দেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে, এ পর্যন্ত ঝঅজঝ এ আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৮০৯৬ এবং মোট মৃতের সংখ্যা ৭৭৪। দ্বিতীয়টি হলো মার্স ( মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রম) যা প্রথমে সাউদি আরবে পাওয়া যায় এবং এই ভাইরাসের সংক্রমণ উটের মাধ্যমে ছড়ায়। এখনো প্রকোপ চলমান তবে ধীর গতিতে ছড়ায়।
সাংবাদিকদেরকে নিয়মিত অবহিতকরণের অংশ হিসেবে শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় আইইডিসিআর মিলনায়তনে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বিষয়ে সভায় একথা জানান আইইডিসিআর-এর পরিচালক প্রফেসর ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি দূর করা প্রয়োজন। করোনা ভাইরাস সাধারনত প্রাণীতে রিজার্ভার হিসেবে থাকে যা খুব সহজে মানুষে সংক্রমণ হয় না। আমরা আগেও বলেছি আবারও বলছি, এই পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের মধ্যে ৭ রকমের করোনা ভাইরাস মানুষকে সংক্রমণে সক্ষম।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বে সর্বমোট সনাক্ত করা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৩৬৫২ (গত ২৪ ঘন্টায় নতুন রোগী ১৩৫৮)। মোট সনাক্ত রোগীর মধ্যে চীনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৮৯৬১ জন। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ২৮৫৮ জন। নতুন করে পাঁচটি দেশে ঈঙঠওউ-১৯আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে, বেলারুশ (১), লিথুয়ানিয়া (১), নেদারল্যান্ড (১), নিউজিল্যান্ড(১), নাইজেরিয়া (১)।
সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সিঙ্গাপুরে এ যাবৎ ৯৮ জন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৯ জনের পরিস্থিতি স্থিতিশীল, এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৯ জন। সিঙ্গাপুরে মোট ৩ জন বাংলাদেশের নাগরিক কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে ১ জন আইসিইউ-তে আছেন এবং তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২ জন বাংলাদেশের নাগরিক সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের দূতাবাস থেকেও আমাদেরকে সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়া পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সিডিসি এর সূত্র অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ায় এ যাবৎ কোভিড-১৯ আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ২৯৩১। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর মধ্যে শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতির কারণে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৭ জন এবং মোট মৃতের সংখ্যা ১৬ জন। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
ইতালি পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, ইউরোপিয়ান সিডিসি থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইতালিতে এখন পর্যন্ত ৪০০ জন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয়েছেন। মোট সনাক্তকৃত রোগীর মধ্যে ৫ জনের চীন ভ্রমনের ইতিহাস রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত মৃত্যু বরন করেছেন ১২ জন। পররাষ্ট্র মন্ত্রলালয় ও ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে মোট ১৩ জ কোভিড-১৯ আক্রান্ত এবং আমিরাতে বাংলাদেশের একজন নাগরিক কোভিড-১৯ আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। তার শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রলালয় ও আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
অন্যান্য দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানান, অন্যান্য কোন দেশে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রবাসী বাংলাদেশী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন নি। দিল্লীতে উহান থেকে আগত ২৩ জন বাংলাদেশী নাগরিক দিল্লী শহর থেকে ৪০ মাইল দূরে একটি কোয়ারেন্টিনে আছেন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানান, আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে সন্দেহজনক কোভিড -১৯ আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এ যাবৎ কারো নমুনাতে কোভিড-১৯ পাওয়া যায় নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালনায় আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসমূহ, সমুদ্র বন্দরমূহ, স্থল বন্দরসমূহে বিদেশ থেকে আগত সকল যাত্রীর তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আজ কোনো কোভিড-১৯ লক্ষণযুক্ত যাত্রী পাওয়া যায় নি। এ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৩৮৩৯৫৮ কে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। কোভিড -১৯ পরীক্ষা করা মোট নমুনার সংখ্যা ৮৭ টি।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা