অর্থকরী ফসলের তালিকা থেকে ‘তামাক’ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে তামাকবিরোধী জোট।
রবিবার ( ২২ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানিয়েছে সংগঠনটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় অর্থনীতি শক্তিশালীকরণের উদ্দেশ্যে কৃষক, উৎপাদক, কৃষি ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সহায়ক কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে “কৃষি বিপণন আইন, ২০১৮” প্রণয়ন করা হয়েছে। রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এ আইনটির তপশিল-১ এ ১৩ ধরনের পণ্যকে কৃষি পণ্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, (খ) ক্যাটাগরীতে অর্থকরী চারটি ফসলের মধ্যে তামাকের নামও রয়েছে।
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষিপণ্যের (কৃষিপণ্য বলতে তপশিল ১ এ উল্লেখিত পণ্য অর্থাৎ তামাকও রয়েছে) মূল্য নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; বিপণন ও ব্যবসা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ; বাজার সংযোগ সৃষ্টি ও সুষ্ঠু সরবরাহের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান; উৎপাদন ও ব্যবসায় নিয়োজিত ও সমিতিসমূহের সহিত নিবিড় সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে কৃষিপণ্যের আধুনিক বিপণন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ; সুষ্ঠু বিপণনের স্বার্থে উৎপাদন এলাকায় বাজার অবকাঠামো, গুদাম, হিমাগার, কুলচেম্বার ইত্যাদি নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা জোরদারকরণ; সর্বনিম্ন মূল্য ও যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন; মূল্য সংযোজন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান; মূল্য সহায়তা প্রদান; অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ; শিল্প ও ব্যবসার উন্নয়ন, উৎসাহ প্রদান, প্রসার এবং চুক্তিভিত্তিক বিপণন ব্যবস্থার কার্যপদ্ধতি উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ উল্লেখযোগ্য। উক্ত আইনে তামাক অর্থকরী ফসল হিসাবে উল্লেখ থাকায় আইন অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে সরকারের সহায়তায় তামাকের ব্যপক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটবে।
উক্ত আইনের অপরাধ ও দন্ড সংক্রান্ত ধারা ১৯ (১) (ছ) এ উল্লেখ করা হয়েছে, জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোন রাসায়নিক বা অন্য কোনো দ্রব্য কৃষিপণ্যে ব্যবহার করিলে তাহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং এজন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবেন। পূণরায় একই অপরাধ করলে দ্বিগুণ হারে দন্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেখানে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে তামাকের মতো স্বাস্থ্যহানীকর পণ্যকে অর্থকরী ফসলের তালিকায় রেখে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া আমাদের সত্যি বিস্মিত করেছে।
সরকার জনস্বাস্থ্যের ও পরিবেশের ক্ষয়-ক্ষতি বিবেচনা করে তামাক নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক নীতি প্রণয়ন ও ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ রোডম্যাপ চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী যেখানে ২০৪০ সালের মধ্যে “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেখানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত একটি আইনে তামাকের মতো ক্ষতিকর ভেষজকে অর্থকরী ফসলের তালিকায় রাখা তামাক নিয়ন্ত্রণ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করবে বলে মনে করে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট।
এমতাবস্থায় অনতিবিলম্বে ‘কৃষি বিপণন আইন, ২০১৮’ এর ধারা ৩০ অনুসারে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তপশিল সংশোধন করে অর্থকরী ফসলের তালিকা থেকে তামাককে বাদ দেওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা