অনলাইন ডেস্ক
২১ বছর ৭ মার্চের ভাষণ বাজাতে বাধা দেওয়ার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতই বাধা দেওয়া হয়েছে, ততই এই ভাষণ আরও উদ্ভাসিত হয়েছে।
সোমবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের জন্য দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভাষণের মধ্য দিয়ে একটি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়েছিলো স্বশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিজয় ছিনিয়ে আনার জন্য। ওই মুহূর্তে কি নির্দেশনা তা ওই ভাষণে তিনি দিয়েছিলেন। অর্থাৎ অসহযোগ আন্দোলনের যে ডাক দেওয়া এবং বাংলাদেশের মানুষ অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করেছিলো।
৭ মার্চের ভাষণের আগের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন, তিনি যখন ওই ভাষণ দিতে যাবেন তার আগে তখন অনেক ছাত্রনেতা নানাভাবে পরামর্শ দিতে থাকেন, কি বলা উচিত। এক ছাত্রনেতাও তো তখন বললেনই, ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে হবে। না হলে সবাই হতাশ হয়ে যাবে। আমাদের কিছু কিছু চিন্তাবিদ যাদের বুদ্ধিজীবী বলি অনেকে অনেক পয়েন্ট লিখে দিয়ে গেছেন।
‘আমার মা একটা কথাই বাবাকে বলেছিলেন, সারাটা জীবন তুমি সংগ্রাম করেছে এদেশের মানুষের জন্য। তুমি জানো এদেশের মানুষের জন্য কোনটা ভালো। কাজেই তোমার মনে যে কথা আসবে তুমি ঠিক সেই কথাই বলবে। কারো কথাই তোমার শোনার প্রয়োজন নাই। ’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘এমন একটা সময় গেছে ৭৫-এ শুধু জাতির পিতাকেই হত্যা করেনি ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণও নিষিদ্ধ ছিলো বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে নির্যাতিত হতে হয়েছে, গুলি খেয়ে মরতে হয়েছে। ২১ বছর এই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার বিকৃত ইতিহাস জেনেছে। ২১ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লাখো শহীদের রক্তদান, আমাদের সংগ্রাম এগুলো ইতিহাস থেকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আজকে এটা প্রমাণিত সত্য যে সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না।
৭ মার্চের ভাষণ যুগ যুগ ধরে বাঙালিদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে স্বাধীনতার জন্য যত ভাষণ দেওয়া হয়েছে তার কোনটা পুনরাবৃত্তি হয়নি কখনো। কিন্তু এই ভাষণটা স্বাধীনতার ৫০ বছর ধরে আমাদের বারবার প্রেরণা দিয়ে আসছে। একটি মাত্র ভাষণ, কেউ হিসেবে করে বের করতে পারবে না, এই কতদিন বাজানো হয়েছে। যুগ যুগ ধরে এটা শুনছি। কতো কোটি কোটি মানুষ এই ভাষণটা শুনেছে তার কোনো হিসেব নাই।
‘যতই বাধা দেওয়া হয়েছে ততই এই ভাষণটা আরও উদ্ভাসিত হয়েছে। এখনো এই ভাষণ আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। এই ভাষণের প্রতিটি লাইন এক একটি কবিতার অংশ। যা মানুষের অন্তরে একটা অনুভূতি নিয়ে আসে, প্রেরণা দেয়। এই ভাষণের মধ্যে দিয়েই যে ঐতিহাসিক কথা-‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ তা ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে প্রেরণা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এই লাইনটা বারবার বাজানো হতো।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর কোনোদিন এই ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। এটা একটা চিরন্তন ভাষণ হিসেবে বিশ্বের বুকে থাকবে। আমাদের এখনো এই ভাষণ প্রেরণা যোগায় যে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়শীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এদেশের মানুষের জন্য। তার ত্যাগ বৃথা যায়নি। এই স্বাধীনতা, এই আদর্শ আর কেউ নসাৎ করতে পারবে না।
‘আজকের প্রজন্মের কাছে এই বিশ্ব অনেক উন্মুক্ত। কাজেই তাদের আর বিভ্রান্ত করা যাবে না। ২১ বছর করেছে এখন আর যাবে না, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রযুক্তির এই যুগে আর অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে, ৭ মার্চের ভাষণ যুগ যুগ প্রেরণা দিয়ে যাবে।”
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা