দিল্লী সহিংসতা
গত সাত বছর ধরে আমি যে শহরে থাকি সেটি জ্বলছে। যেসব মুসলিম সিএএ, এনপিআর এবং এনআরসির বিরুদ্ধে সোচ্চার, তারা বর্তমান শাসক দলের ক্যাডার বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হচ্ছে। এই দেশের সত্যিকারের নাগরিকেরা এখন ক্ষমতাহীন এবং তারা এখন হতাশায় ভুগছে। আমি আমার দীর্ঘ ৪০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে অনেকগুলো সহিংসতা সচক্ষে দেখেছি। এক সাধারণ সমাধানে আমি সবসময় এসেছি ঐসব দাঙ্গা (প্রায়ই সেগুলো দাঙ্গা বা রায়ট নয়, একদিক থেকে আক্রমণ হয়) কখনোই সম্ভব হতো না যদি না, রাষ্ট্র সহায়তা করত। আমি ১৯৯২ সালে আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত বইয়ে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
এটা আগে থেকেই ধারণা করা যাচ্ছিল যে, দিল্লী নির্বাচনের পর এই ধরণের সহিংসতা হতে পারে, যেহেতু জনগণের কাছে অর্থনৈতিক প্রত্যাশা বা চাকরির সুযোগ নেই তাদের কাছে হিন্দুত্ববাদই বাঁচার একমাত্র পথ। মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সিস্টেমেটিক্যালি রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে এই মতবিরোধগুলো ছড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে অকল্পনীয় এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু শাহীন বাগ এবং পার্ক সার্কাস এবং অন্যান্য এলাকার নারীরা রাষ্ট্রকে এই বার্তা দিয়েছে যে, তারা কোনকিছুকেই এখন আর ভয় পায় না। এই সরকার সামন্তবাদী, পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এবং তারা নিজেরাই জানেনা তারা এই সমস্যার সমাধান কিভাবে করবে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের ভয় দেখাতে ব্যর্থ হয়ে তার শেষ অস্ত্রটি ব্যবহার করছে। পুরো ঘটনায় মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা আশা করছে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মুসলিমরা এই ঘটনায় তাদের প্রতিবেশীদের উপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাবে। তারা তখন মুসলিমদের খুনী মুসলিম আখ্যা দিয়ে তাদের হত্যা করতে সক্ষম হবে।
মুসলিমরা এখন পর্যন্ত নিবৃত আছে এবং তারা তাই করবে। আমি মনে করি, বিজেপি তার শেষ কার্ড চালানোর পর আর কিছু করবে না। তাই, প্রত্যেক সচেতন ভারতবাসীর পক্ষে শুধু সহিংসতায় আক্রান্তদের সাহায্য করে ক্ষ্যান্ত হওয়া নয়, তাদের তার চারপাশের মানুষদের নিয়ে এমন বৃত্ত তৈরি করে ফেলতে হবে যেন সরকার আরও ক্লুলেস এবং হতাশ হয়ে পড়ে।
# নাজেস আফরোজ, ভারতীয় সাংবাদিক, ফেসবুক থেকে নেয়া।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা