অনলাইন ডেস্ক
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি কমপ্লেক্সের ১ নম্বর গেটের সামনে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ সেলিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কারও কাছে মাথা নত করতে শেখেননি। আত্মসমর্পণ করতে শেখেননি। তার কিছুক্ষণ পর বঙ্গবন্ধুকেও হত্যা করা হয়। কিন্তু শফিউল্লাহ যদি এক ট্রাকও আর্মি পাঠাতো, তাহলে বঙ্গবন্ধু মারা যেতেন না। সে তা করে নাই। বরং সে রেডিও সেন্টারে গিয়ে মোস্তাক আর খুনিদের আনুগত্য প্রকাশ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা থেকে শুরু করে আমাদের স্বাধীকার আন্দোলন পর্যন্ত এই বাংলার মানুষের জন্য কষ্ট করেছেন, বারবার জেল খেটেছেন, ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছেন। তবুও তিনি বাংলার অধিকারের প্রতি একবারও পিছপা হননি। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাকে বার বার হত্যা করতে চেয়েছে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে হত্যা করার জন্য কবর পর্যন্ত খুঁড়েছিল। কিন্তু, আল্লাহর অসিম কৃপায় বঙ্গবন্ধুকে তারা হত্যা করতে পারেনি।’
আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাঙালির জন্য সারাজীবন কষ্ট করেছেন। নিজের শান্তির দিকে, পরিবারের দিকে দেখেননি, কোনদিন আরাম আয়েশ করেননি; সেই বাঙালি মীর জাফর মোস্তাক-জিয়া চক্র পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমাদের কলঙ্কিত করেছে।’
‘জাতির স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য আল্লাহতালা তাকে পাঠিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যুগে যুগে আসবেন না। তার মতো দেশপ্রেম, ত্যাগ, মানুষের জন্য ভালবাসা বিশ্বে কতজনের আছে, আমার জানা নেই।’
তিনি বলেন, ‘শফিউল্লাহ এখনো বেঁচে আছে। কিন্তু, মানুষ তাকে আজ ঘৃণা করে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য খালেদ মোশারফকেও দায়ী করেন শেখ সেলিম। তিনি বলেন, ‘খালেদ মোশারফকেও মরতে হয়েছে। সেদিন যদি বঙ্গবন্ধুকে সে বাঁচাতে যেত, তাহলে তার পরিণতি অমন হতো না।’
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পরিণতি সম্পর্কে শেখ সেলিম এমপি বলেন, ‘কর্নেল তাহেরকে বঙ্গবন্ধু চাকরি দিয়েছিলেন। সেই তাহেরও বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত ছিল। সে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য গণবাহিনী করেছিল। সশস্ত্র বাহিনী করেছিল। সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সে বিপ্লবী গ্রুপ তৈরী করেছিল। জিয়ার সাথে একত্রিত হয়ে রেডিও স্টেশনে গিয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে চায়। কিন্তু, ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জিয়ার সাথে তার দ্বন্দ্ব হয় এবং কর্নেল তাহেরের করুণ পরিণতি হয়। তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।’
পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন শেখ সেলিম। তিনি বলেন, ‘এর প্রতিফল কী হয়েছে? পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ফাঁসি দিয়েছিল।’
‘কর্নেল গাদ্দাফি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ফারুক-রশিদদেরেকে আশ্রয় দিয়েছিল। সেই গাদ্দাফিকে তার দেশের জনগণ রাস্তার ওপর ফেলে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তার পরিণতিও করুণ।’
শেখ সেলিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধুর নাম খুনিরা মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু, যতদিন বাংলার মানুষ থাকবে, বাংলার ইতিহাস থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। বঙ্গন্ধুর দৈহিক মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু তার আদর্শের মৃত্যু হবে না। বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে চিরদিন নক্ষত্রের মতো জ্বলবে।’
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা