নাটোর, টাঙ্গাইল ও নওঁগায় ৮ জন নারীকে হত্যাকারি সিরিয়াল কিলার বাবু শেখকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় পুলিশ তার দুই সহযোগীকেও গ্রেফতার করে। নাটোর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তার লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো গণমাধ্যমকে জানান রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এ কে এম হাফিজ আকতার।
তিনি জানান, মানসিকভাবে বিকৃত এই সিরিয়াল কিলারের বাড়ি নওঁগা জেলার রানিনগর থানার হরিশপুর গ্রামে। গত ৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে নাটোরের লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলায় পরপর দুই নারীকে হত্যা করে নগদ টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে যায় একদল চোর। এ ঘটনায় দুই থানায় পৃথক মামলা দায়েরের পর মাঠে নামে পুলিশ। তদন্তের ধারাবাহিকতায় প্রথমে নাটোরের সিংড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রুবেল আলী (২৩) নামে এক যুবককে। তার দেওয়া তথ্যমতে নাটোর শহরের স্বর্ণকার লিটন খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যমতে আসাদুল ইসলাম (৩৬) নামে অারও একজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় দুই হত্যার সঙ্গে জড়িত বাবু শেখ ও রুবেল। পরে ১৯ অক্টোবর বাবু শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নাটোর জেলায় ৫টি, টাঙ্গাইলে ২টি ও নওগাঁয় ১টি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে সিরিয়াল কিলার বাবু শেখ। আটটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে তিনজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করে বাবু বলে সে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
মৃত হতভাগ্য নারীদের মধ্যে নাটোরের নলডাঙ্গার বাশিলা এলাকায় আমেনা বেওয়া ও খাজুরা এলাকার স্কুলছাত্রী মরিয়ম খাতুন লাবনি, সিংড়ার শেফালী খাতুন, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাঁশতল গ্রামের রুপ বানু, টাঙ্গাইলের সখিপুরের সমলা বেগমকে হত্যার কথা স্বীকার করে বাবু। সে ২০০৭ সালে নওগাঁ জেলা সদরে আরো একটি হত্যাকাণ্ড ঘটায় ।
এছাড়া গত ৯ অক্টোবর নাটোর জেলার লালপুর থানার চংধুপইল এলাকার আনসার সদস্য সাবিনা পারভীন ও বাগাতিপাড়ার জয়ন্তীপুর এলাকায় রেহেনা বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ দুটি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেরিয়ে আসে আসাদুলের নাম।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নাটোর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে বাবু শেখ ওরফে কালু ও শাহিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বাবু শেখ আটটি খুন করার কথা স্বীকার করে।
ডিআইজি আরও বলেন, জেলে সেজে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়াতো বাবু। পুরুষশূন্য বাড়ির ওপর নজরদারি করতো সে। সুযোগ বুঝে ওই বাড়িতে রাতে প্রবেশ করে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর নগদ টাকা ও স্বর্ণলংকার চুরি করতো বাবু ওরফে কালু।
ডিআইজি আশা প্রকাশ করেন, বাবুকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ৮জন নারীকে হত্যা মামলার সবকয়টির বিচার করা সম্ভব হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেনসহ পুলিশ কর্মকর্তাগণ।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা