অফিসের চিকিৎসককে দেখানোর পরের প্রেসক্রিপশন
তাসকিনা ইয়াসমিন
মমতা হেনা পেশায় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তিনি ব্রান্ডিক্স ক্যাজুয়ারওয়ার (বাংলাদেশ) লিমিটেডে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি গর্ভবতী। এই সময়ে তাকে চাকরি থেকে টার্মিনেট করার কথা জানানো হয়েছে। এতে প্রচণ্ডভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। গত ২১ জানুয়ারি এবং ২২ জানুয়ারি দুই দিন অফিসে গেছেন কাজ করার জন্য কিন্তু তাকে ঢুকতে দেয়নি অফিস অথরিটি।
মমতা হেনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাল সবুজের কথা ডটকম কে বলেন, চাকরি তো আমরা ক্ষুধা নিবারণের জন্য করি। এখন আমি প্রেগন্যান্ট এই সময়ে তারা আমাকে কিভাবে চাকরি থেকে বাদ দেয়? আমার এই চাকরিটা খুব দরকার। আমার নিজের জন্য, আমার সন্তানের জন্য এই চাকরিটা দরকার।
তিনি বলেন, আমি আসলে অফিস পলিটিক্সের শিকার হয়েছি। তাই চাকরিটা এভাবে এইরকম সময়ে চলে যাচ্ছে।
মমতা হেনার স্বামী মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, আমার স্ত্রী অসুস্থ সেটা কোম্পানির চিকিৎসক জানেন। কোম্পানির চিকিৎসকের পরামর্শেই আমার স্ত্রীকে বেপজার হাসপাতাল থেকে কুমিল্লা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপরও অফিস কিভাবে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়? আমরা এই ঘটনার জন্য ন্যায়বিচার চাই। প্রয়োজনে আমরা আইনী লড়াইয়ে যাব। তবে, আমরা আশা করব কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে এবং আমরা দেশের জন্য কাজ করি। আমাদের কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমার স্ত্রীকে এই অবস্থায় পুনরায় কাজে যোগদান করার সুযোগ দেবে।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রীকে রিজাইন দিয়ে আবার নতুন করে চাকরিতে যোগদানের জন্য কর্তৃপক্ষ চাপ দিচ্ছে। এটা খুব অন্যায় বলে আমরা মনে করছি।
জানা যায়, ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা (৫) এর ৭ অনুযায়ী প্রভিশন পিরিয়ড হবে তিনমাস। মমতা হেনার ক্ষেত্রে প্রভিশন পিরিয়ড বাড়ায়নি। ফলে তিনি অক্টোবরের ২১ তারিখ পার্মানেন্ট হয়ে গেছেন।
জানা যায়, মমতা হেনাকে ঐ প্রতিষ্ঠানেরই মেডিক্যাল সেন্টার দেখেছে ডিসেম্বরের ১২ তারিখ এবং ২১ তারিখ। ঐ যায়গার রেকর্ডে তিনি যে, প্রেগন্যান্ট সেটা লেখা রয়েছে। তিনি শেষ অফিস করেছেন ১৩ তারিখ। অসুস্থ হওয়ায় তিনি ওখানকার মেডিকাল সেন্টারে দেখান । সেখান থেকে বেপজার মেডিকেল সেন্টারে যান। সেখান থেকে তাকে রেফার করে কুমিল্লা হাসপাতালে । কুমিল্লা হাসপাতালে রেফার করার পরে তিনি আর অফিস যেতে পারেন নি। তিনি ফোন করে জানান যে অসুস্থ। এরমধ্যে তাকে ১৯ তারিখে টেলিফোন করে জানিয়েছে, তাকে টার্মিনেট করা হয়েছে। তাকে বাসার ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমত তাকে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় অফিস টার্মিনেট করতে পারেনা। দ্বিতীয়ত লেবার ল অনুযায়ী তাকে টার্মিনেট করতে হলে তাকে ১২০ দিনের নোটিশ দিতে হবে। ছুটিতে থাকা অবস্থায় তাকে টার্মিনেট করা যায়না।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য বেপজার জেনারেল ম্যানেজার মেহবুব আলীর ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা