চীন, সিঙ্গাপুর, দঃ কোরিয়া, জাপান, ইরান, ইতালি এইসব দেশে থেকে ফেরার পর টানা ১৪ দিন নিজ বাড়িতে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছেন আইইডিসিআর এর পরিচালক প্রফেসর ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি রবিবার (১ মার্চ) নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ পরামর্শ দেন।
এসময় তিনি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরােধে হ্যান্ডশেক, কোলাকুলি পরিহারের আহ্বান জানান।
বিদেশ ফেরতদের সম্পর্কে তিনি বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় যাবার পথে গাড়ীতে মাস্ক পরবেন। সম্ভব হলে গণ পরিবহনের ব্যবহার না করে নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করুন এবং পরিবহনের জানালা খোলা রাখুন। অবশ্যই বাড়ীতেই থাকুন। জনসমাগমে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকতে মাস্ক ব্যবহার করুন। নিয়মিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ দুই হাত ধুয়ে নিন। অপরিস্কার হাতে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করবেন না। শারীরিক অসুস্থতা (জ¦র, কাশি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি) দেখা দিলে আইইডিসিআর এর হটলাইনে (০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১) ফোন করবেন।
এসময় তিনি করোনা ভাইরাসের বৈশ্বিক অবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)’র প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বে সর্বমোট সনাক্ত করা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৫৪০২ (গত ২৪ ঘন্টায় নতুন রোগী ১৭৫৩)। মোট সনাক্ত করা রোগীর মধ্যে চীনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৯৩৯৪ জন। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ২৯২৪ জন। নতুন করে দুটি দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে, মেক্সিকো(২টি) ও সান মেরিনো (১টি)।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ২ জন বাংলাদেশী বাড়ি ফিরেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে এ যাবৎ ১০২ জন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৯ জনের পরিস্থিতি স্থিতিশীল, আশঙ্কাজনক রয়েছে ৭ জন এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ জন। সিঙ্গাপুরে মোট ৩ জন বাংলাদেশের নাগরিক কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে ১ জন আইসিইউ-তে আছেন এবং তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২ জন বাংলাদেশের নাগরিক সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের দূতাবাস থেকেও আমাদেরকে সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়া পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরীয়ার সিডিসি এর সূত্র অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ায় এ যাবৎ কোভিড-১৯ আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৩৫২৬। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর মধ্যে শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতির কারণে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩০ জন এবং মোট মৃতের সংখ্যা ১৭ জন। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
ইতালি পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানান, ইউরোপিয়ান সিডিসি থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইতালিতে এখন পর্যন্ত ৮৮৮ জন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যু বরন করেছেন ২১ জন। পররাষ্ট্র মন্ত্রলালয় ও ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে মোট ১৩ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত এবং আমিরাতে বাংলাদেশের একজন নাগরিক কোভিড-১৯ আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। তার শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রলালয় ও আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
তিনি জানান, অন্যান্য কোন দেশে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রবাসী বাংলাদেশী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন নি। দিল্লীতে উহান থেকে আগত ২৩ জন বাংলাদেশী নাগরিক দিল্লী শহর থেকে ৪০ মাইল দূরে একটি কোয়ারেন্টিনে আছেন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৩,৮৩,৯৫৮ জনের কোভিড-১৯ আছে কিনা তার স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এরমধ্যে ৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কারো শরীরে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা