কাটা সুতার সাথে যেমন ঘুড়ির সম্পর্ক থাকে না, তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রবৃদ্ধির সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে না।
রবিবার (৩ নভেম্বর) ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা: ২০১৯-২০ অর্থবছর প্রারম্ভিক মূল্যায়ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সিপিডি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ব্যাংকিং খাত ও পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা থাকলে দেশের অর্থনীতি টেকসই হবে না। রপ্তানি বাড়াতে সরকার সংস্কারের দিকে না গিয়ে বরং প্রণোদনার দিকে গিয়ে ভুল করছে। প্রণোদনার মাধ্যমে কর ফাঁকি ও বিদেশে টাকা পাচারের আসক্তি তৈরি করা হচ্ছে।
স্বচ্ছতার অভাব ক্ষতিগ্রস্থ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই স্বচ্ছতার অভাব সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত করে নীতি নির্ধারকদের। কারণ উনারা যে সিদ্ধান্তগুলো নেন সেগুলো যদি সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে না হয় তাহলে সিদ্ধান্তের ভ্রান্তি হওয়ার আশংকা দেখা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গত নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। সম্প্রতি গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির মধ্যে টানাপড়েন সম্পর্কও বাজারে প্রভাব ফেলেছে। নানা প্রতিশ্রুতিও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারছে না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ কারণে পুঁজিবাজারে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- দুর্বল আইপিও, বিশৃংখল আর্থিক বিবরণী, বিও অ্যাকাউন্টে স্বচ্ছতার অভাব, সেকেন্ডারি মার্কেটে সন্দেহজনক লেনদেন এবং প্রশ্নবিদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, যে কোম্পানি তিন বছর ধরে বার্ষিক সাধারণ সভা করে না, সে কোম্পানি হঠাৎ করে সেরা লাভজনক কোম্পানি হয়ে উঠে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এই ঘটনা তদন্ত করে না।
মূল প্রবন্ধে জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমানে দেশের প্রধানত চারটি খাতে স্থবিরতা ও নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর রাজস্ব আহরণ জাতিসংঘের হিসাবে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ তা ১৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির টার্গেট করেও লক্ষ্য পূরণ করতে পারছে না।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর সামষ্টিক অর্থনীতির স্থবির অবস্থায় থাকা দ্বিতীয় খাত । খাতটিতে সম্প্রতি তারল্য বাড়লেও ব্যক্তিখাতে ঋণ কমেছে। সরকারের পক্ষ থেকে যে ৯ এবং ৬ শতাংশ সুদ হার নির্ধারণ করা হয় তাও বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
বৈদেশিক লেনদেন প্রসঙ্গে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৈদেশিক লেনদেন খাতেও কিছুটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আমাদের এক সময়ের ১০ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ এখন প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার হলেও এটি এখন মাত্র পাঁচ মাসের আমদানির ভার বহন করতে পারে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আশা প্রকাশ করেন যে, সিপিডি প্রস্তাবিত সুপারিশ আমলে নিয়ে সরকার তাদের নীতি পর্যালোচনা করবে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা