সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : বরগুনার তালতলীর স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি খাদ্য সহায়তা দেওয়ার নাম তালিকাভুক্তি করার কথা বলে দিনমজুরের মেয়েকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোনারামপুরে এক চাতাল কল শ্রমিক অন্য অন্য শ্রমিকের ৯বছরের কন্যা শিশুকে ধর্ষণ করে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এক বিবৃতিতে বলেন, দৈনিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় যে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সরকারি সিদ্ধান্তে ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশের মানুষ ঘরে অবস্থান করছেন। এই সময়ে বরগুনার তালতলীর স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামীগের সভাপতি আনোয়ার খান খাদ্য সহায়তা দেওয়ার নাম তালিকাভুক্তি করার কথা বলে দিনমজুরের মেয়েকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই নারীর স্বামী স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামীগের সভাপতি আনোয়ার খানের বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি দেখে ফেললে ঘটনাটি কাউকে বললে তাকে খুন করার হুমকি দেন এবং পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ভুক্তভোগী দিনমজুর পরিবারকে থানায় মামলা করলে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেন। পরের দিন নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামীকে ইউপি সদস্য আনোয়ার খান তুলে নিয়ে যান এবং ওই নারীর স্বামীর কোনো খোঁজখবর পাওয়া যায়নি। আর ওই দিনমজুর পরিবারটিকে ইউপি সদস্যের লোকজন অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোনারামপুরে এক চাতাল কল শ্রমিকের ৯বছরের কন্যা শিশুটি বিকেলে চাতাল কলের ভেতরে খেলা করছিল। এর কিছুক্ষণ পর শিশুটির বড় ভাইয়ের বন্ধু আরেক চাতাল কলের শ্রমিক লিটন সেখানে আসে। এসময় শিশুটিকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে ধান ক্ষেতে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। সন্ধ্যায় ওই শিশুর এক সহপাঠী তার পরিবারকে এসে জানায় শিশুটি রক্তাক্ত অবস্থায় ধান ক্ষেতে পড়ে আছে। গত ০৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা গিয়ে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আশুগঞ্জ থানায় হাজির হয় তার মা। শিশুটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ২৫০শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্ত্যবরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও গাইনি কনসালটেন্ট শিশুটির অবস্থা আশঙ্কজনক এবং তার বিশেষ অঙ্গ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে ফলে শিশুটিকে ঢাকায় প্রেরণ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন।
এই সকল ঘটনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে। দেশের বর্তমান ক্রান্তিকালের অজুহাতে এই সকল ঘৃন্য অপরাধীরা যেন কোনভাবেই পার পেয়ে না যায় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। সারাদেশে বৈশ্বিক মহামারির সংক্রমণ ঠেকানোর সরকারি সিদ্ধান্তে অঘোষিত লকডাউনের পরিস্থিতিতে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংতায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন।
সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে নারী ও কন্যাশিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী ধর্ষণের শিকার, যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনাদ্বয়ের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছে।
সেইসাথে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা গ্রহনসহ ধর্ষণের ঘটনা প্রতিরোধে শূন্য সহিষ্ণনুতার নীতি গ্রহন সাপেক্ষে আশু কার্যকর বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসনের নিকট বিশেষভাবে জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে ধর্ষণ, নারী ও শিশুর প্রতি সংহিসতার ঘটনা প্রতিরোধে সকলের প্রতি বিশেষভাবে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা