করোনা নিয়ে ‘খারাপ পরিস্থিতির’ আশঙ্কার কথা বলছে পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জানুয়ারি থেকে সাড়ে ছয় লাখ মানুষ দেশে এসেছেন। এর মধ্যে মার্চ মাসের ২০ দিনেই এসেছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার।
আর গতকাল পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মাত্র ১৭ হাজার ৭৯০ জন। দেশে আসার সময় সঠিক ঠিকানা না দেওয়া এবং পাসপোর্টের ঠিকানায় অবস্থান না করার কারণে ফিরে আসা এসব লোককে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।
প্রবাসীদের অনেকেই নির্বিঘ্নে হাটবাজারে শপিং মলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কেউ কেউ দাওয়াত দিয়ে লোকসমাগম করছেন। কিন্তু পুলিশ এসব লোককে খুঁজে পাচ্ছে না। বিদেশ থেকে ফেরা এসব লোককে কোয়ারেন্টিনে রাখা নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, ফিরে আসা এসব লোক পরিবার ও সমাজের সঙ্গে মিশে গেছেন। ইতিমধ্যে ফিরে আসা বা তাঁদের সংস্পর্শে আসা লোকদের শরীরে করোনাভাইসারের উপসর্গ দেখাও দিয়েছে। তবে পরীক্ষা না করায় সেটা করোনা কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
পুলিশের হিসাবে মার্চের প্রথম ২০ দিনে বিদেশ থেকে ফিরেছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার মানুষ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এসেছেন কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশগুলো থেকে। বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই তাঁরা যাঁর যাঁর বাড়িতে চলে গেছেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৮ হাজার বিদেশফেরত স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে আছেন। অন্যদের কোনো হদিস নেই।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত এসব প্রবাসী স্বাভাবিকভাবেই গ্রামে-গঞ্জে, হাটবাজারে ঘুরেছেন, সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এই বিদেশফেরতদের মধ্যে কেউ সংক্রমিত হয়ে থাকলে তা কত মানুষের মধ্যে ছড়াবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণাই করা যাচ্ছে না। মাঠ থেকে পাঠানো প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পুলিশের কর্মকর্তারা এক ‘ভয়ংকর পরিণতি’র আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এই অবস্থার বিপরীতে দেশে কোনো প্রস্তুতি খুবই সামান্য। চিকিৎসক-নার্সদের এখন পর্যন্ত ঠিকভাবে সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই সরবরাহ করা হয়নি। জ্বর-কাশি-গলাব্যথার রোগী হাসপাতালে এলেই দূরত্ব বজায় রাখছেন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকেরা।
গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ছিলেন ৩৩ জন, যাঁদের ৯ জনই শিবচরের। আর এই ৯ জনের মধ্যে ৬ জনের সংস্পর্শে ছিলেন অন্তত ৩৫০ ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে ১০৭ জনকে চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। বাকি ২৪৩ জনের কোনো হদিস নেই। তাঁদের শরীরে করোনার উপসর্গ আছে কি না, তা কেউ নিশ্চিত হতে পারছে না।
পুলিশ বলছে, দেশে ফিরে আসা লোকজন যদি স্বেচ্ছায় নিজেদের বিচ্ছিন্ন না করেন, অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করেন, তাহলে এক ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি সোহেল রানা বলেন, করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশের বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম বন্ধ করেছে পুলিশ। মানুষকে সচেতন করছে, তাদের সহায়তা দিচ্ছে। আবার এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমান বাস্তবতায় এবং জনস্বার্থ বিবেচনায় পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
এর আগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছে পুলিশ। বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাফেরা না করার জন্য জনগণকে অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করছে। কোথাও কোথাও প্রয়োজনে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে প্রচারণা চালাচ্ছে পুলিশ। করোন বিরোধী বিভিন্ন পরামর্শ এবং সরকারের নির্দেশনা সম্পর্কেও জনসাধারণকে সচেতন করছেও।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকেই লোকজনের মধ্যে প্রচারপত্র বিলি করতে শুরু করে। করোনা প্রতিরোধে জেলা, থানা ও ইউনিয়নেও কমিটি করে দেয়। তারপরও এই অঞ্চলে সব লোককে কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা