সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সকল হাসপাতালের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে বিনামূল্যে সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি জানিয়েছে বাম দলগুলোর নেতৃবৃন্দ। সোমবার ( ৯ মার্চ) বাম গণতান্ত্রিক জোট, ৪টি বাম দল ও বাম ঐক্য ফ্রন্ট এই তিন জোটের ১৬টি বামপন্থী দলের নেতৃবৃন্দের এক যৌথ সভায় নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান। সভাটি বাসদ কার্যালয়ের নীচ তলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভার প্রস্তাবে বিশ্বব্যাপী মরণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে জনজীবন বিপন্ন হওয়ার হুমকীতে এবং বাংলাদেশেও ঘণবসতিপূর্ণ জনপদে করোনা ভাইরাসের সংক্রামিত ৩ ব্যক্তি সনাক্ত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
প্রস্তাবে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সনাক্তকরণ, সচেতনতা ও সতর্কতামূলক প্রচারনা ও কর্মসূচির অপ্রতুলতার কথা উল্লেখ করে সরকারি-বেসরকারি সকল গণমাধ্যমে ও রাষ্ট্রীয় সকল প্রশাসন ও সংস্থার উদ্যোগে সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচি গ্রহণের জন্য দাবি জানানো হয়। একই সাথে সরকারি-বেসরকারি সকল হাসপাতালের সক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা ভাইরাস নিয়ে যেন ডেঙ্গুর মতো আস্ফালন বা তথ্য গোপন করার অপচেষ্টা করা না হয়। ইতিমধ্যে সংবাদ বেরিয়েছে বিমান বন্দরগুলোতে করোনা আক্রান্ত সনাক্তকরণের জন্য যে ৭টি থার্মাল স্ক্যানার কেনা হয়েছিল তার ৬টি বিকল হয়ে গেছে, যা সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ। প্রস্তাবে ঐ যন্ত্র ক্রয়ের সাথে যুক্তদের অবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনার দাবি করা হয়।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রস্তাবে বলা হয় ইতিমধ্যে যে ৩ জন করোনা আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে দুইজন ইতালী ফেরৎ। তাহলে প্রশ্ন বিমানবন্দর দিয়ে কাদের সহায়তায় এসব আক্রান্তরা বেরিয়ে আসছে। সরকার যতই বলুক যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে তা যে মিথ্যা বুলি সর্বস্ব এ ঘটনা তার প্রমাণ।
সভায় গুজব ছড়িয়ে মাস্ক, বিভিন্ন হ্যান্ড সেনিটাইজেশন কীট এর দাম বাড়িয়ে মুনাফা লোভীদেরকে নির্বৃত্ত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।
সভার প্রস্তাবে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা কত সে তথ্য গোপন নয় বরং সঠিক তথ্য সরবরাহ করে জনগণকে সচেতন ও সতর্ক করে প্রিভেন্টিভ ও প্রতিষেধক মূলক ব্যবস্থা নিতে উৎসাহিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সাথে সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে শ্রমজীবী-নিম্মবিত্ত-মধ্যবিত্ত জনগণকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের দাবি জানানো হয়।
সভা থেকে তিন জোটের শরীক দলসমূহের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের জনগণকে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান পরিচালনা করার আহ্বান জানানো হয়।
সভার অন্য এক প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার মুজিব বর্ষ পালন উপলক্ষে ভারতের হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এর প্রতিবাদে এদেশের সেক্যুলার বাম গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষ থেকে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক মোদির বাংলাদেশ সফরকে প্রত্যাখান করে আগামী ১৫ ও ১৬ মার্চ যথাক্রমে ঢাকা ও দেশব্যাপী কালো পতাকা বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। যেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে ‘বিশ্ব পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি’ বিবেচনায় মুজিব বর্ষের বড় ধরনের জমায়েত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে এবং নরেন্দ্র মোদির সফরও বাতিল বলে জানানো হয়েছে সেহেতু ঘোষিত কালো পতাকা বিক্ষোভ প্রতিবাদ কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে ।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আকবর খান।
এতে বক্তব্য রাখেন, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মনীরুদ্দিন পাপ্পু, বাচ্চু ভুইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়জুল হাকিম লালা, নয়া গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের নেতা বিপ্লব, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের নেতা মাসুদ খান, গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক ও বাম ঐক্য ফ্রন্টের সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন নাসু, বাসদ (মাহবুব) এর নেতা মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা