অনলাইন ডেস্ক
তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৮ দশমিক ছয়-এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে এ বছর রপ্তানি আয়ে বাংলাদেশ নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে, ইনশা আল্লাহ।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দামে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে পণ্য পরিবহণেও ভাড়া ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে আমাদের দেশেও কিছু কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কিন্তু চুপচাপ বসে নেই। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে স্বস্তি নিয়ে আসার।
শেখ হাসিনা বলেন, চলতি পবিত্র রমজান মাসে আমরা টিসিবি’র মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে প্রায় ১ কোটি পরিবারকে কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী দামে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। রাজধানী ঢাকায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রতিদিন ১৫টি ফ্রিজার ভ্যানে করে সাশ্রয়ী দামে মাংস, ডিম এবং দুধ বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
‘এর ফলে, অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ইতোমধ্যে কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে। এছাড়া, সরকার আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ১ কোটি ৩৩ হাজার ৫৪টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে ১ লাখ ৩৩০ মেট্রিক টনের বেশি চালের বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
দেশে চালসহ কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই
কিছু গণমাধ্যমের অতিরঞ্জিত খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যমে এমনভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যেন দেশে দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে।
‘আমি দৃঢ়ভাবে আপনাদের জানাতে চাই যে, দেশে চালসহ কোন পণ্যের ঘাটতি নেই। সাশ্রয়ী দামে পণ্য কেনার জন্য টিসিবি’র দোকানে মানুষ ভিড় করবে- এটাই স্বাভাবিক। এটাকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরার কী কারণ থাকতে পারে?’
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অর্থনীতির মূল শক্তি কৃষি। আমাদের সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির ফলে চাল, শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ উৎপাদনে আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মওসুমে ধানের বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে।
মেগা প্রকল্প নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে – কোন ঋণ নেওয়া হয়নি। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে আমরা অন্যান্য মেগা প্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছি। আর শুধু ঋণ নয়, বিদেশি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমাদের অর্থনীতির চেহারা বদলে যাবে।’
তিনি বলেন, আমরা দেশি-বিদেশি ঋণ নিচ্ছি। তবে তা যাতে বোঝা হয়ে না উঠে সে দিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতা আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা।
সরকারপ্রধান বলেন, ২০২২ এবং ২৩ হবে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলক বছর। আর কয়েক মাস পরেই চালু হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মাসেতু। এই সেতু জিডিপি’তে ১.২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
‘এ বছরের শেষ নাগাদ নাগাদ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অংশে মেট্রোরেল চালু হবে। আশা করা যায়, মেট্রোরেল রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।’
আগামী অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর নদীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম টানেল চালু বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট আগামী বছরের শেষ নাগাদ চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত মাসে পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্ধারিত সময়ের আগেই উদ্বোধন করা হয়েছে। অন্যান্য মেগাপ্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত ১৩ বছরে যে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে তা অর্থনীতির সামষ্টিক সূচকগুলো বিবেচনা করলেই স্পষ্ট হয়। ২০০৯ সালে জিডিপি’র আকার ছিল মাত্র ১০২ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে তা ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৭০২ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ২ হাজার ৫৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
‘এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ভাবনা এবং দূরদৃষ্টি-সম্পন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে। গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রেখে মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার ফলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে।’
দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করা সরকারের দায়িত্ব মন্তব্য করে করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যে সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন তা বাস্তবায়ন করতে অবদান রাখতে পারছি বলে আমরা গর্বিত। যতদিন বেঁচে আছি, মহান রাব্বুল আলামিন আমাকে কাজ করার সামর্থ্য দেবেন, ততদিন মানুষের জন্য কাজ করে যাব; জনগণের সেবা করে যাব।
নববর্ষের শুভমুহূর্তে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় স্নাত হয়ে বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
পহেলা বৈশাখ আমাদের অনুপ্রাণিত করে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সকল সঙ্কীর্ণতা, কূপমণ্ডূকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পহেলা বৈশাখ আমাদের অনুপ্রাণিত করে। মনের ভেতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর
আমাদের নতুন উদ্যোমে বাঁচার শক্তি যোগায়, স্বপ্ন দেখা।
তিনি বলেন, আমরা যে বাঙালি, দেশবুকে এক গর্বিত জাতি; পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণের মাধ্যমে আমাদের এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে পায়, উজ্জীবিত হয়।
পয়লা বৈশাখের বরণ বাঙ্গালী সর্বজনহীন উল্লেখ করে শেখ বলেন, আবহমান ধরে বাংলার গ্রাম-গঞ্জে, আনা-নাচে এই অধিকারপালিত কাক। গ্রামীণ মেলা, হালখা, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার নীতি ছিল বর্ষবর মূল অনুষঙ্গ।
‘ব্যবসায়ীরা বছর বছর দেনাও দেনা-পারাপারের জন্য আলোচনা করতে হলে হালখাতা পালন করেন। গ্রামী পরিবারগুলো মেলা থেকে প্রকাশনা তালিকায় তৈজসপত্র প্রকাশ করতে। বাড়িতে বাড়িতে সাধ্যমত উন্নত খাবারের খাবার।
তিনি বলেন, শহর শহর বিভিন্ন বৈশাখ উদ্যানের উদয় বসতি, ওয়াইজ মৌ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজিমপুর, ওয়াইজ মৌ, ওয়ালভীবাজার সহ বিভিন্ন হালখাতা, মেলাতো, মেলায়কেনা, গানবাজনা, ভ্রমণ-সার্কাস ঢাকা স্থানান্তর ইত্যাদি। ষাটাতে রমনার বমূলে সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক ছায়ানটের বরন সঙ্গীত পরিবেশন শুরু হয়।
‘আজ শুধু কথা নয়, যে বাংলায় তার বসবাসের জন্য যোগ দিয়েছেন, সেখানে বাংলার বছরের লোক কৃতিকে বয়ে নিয়ে নিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা জানান, তারা বাংলা। আর এর মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ভিন্ন হচ্ছে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে সংস্কৃতির সেতুবন্ধন।
স্বেচ্ছাভামগসের কারণে বিগত বছর জন উন্কুল পন্শাখের সকালের না করার কথা মুক্ত তিনি বলেন, ‘করে বৈমানে আলাদা করে প্রকোপ অনেকটাই বিকল্প আছে। তাই এই সীমিত ঘোষণাকে দেখতে হলে সামনের দিকে যেতে হবে।
‘বিতাবেভাইরাস নির্ধারিত হয়নি। নতুন প্রতিভাভাভাইরাস আবারও এই সময়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা অর্জন করতে পারে। আমি সকলকে নীতিমালা সমন্বয়ের জন্য আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্য স্বাভাবিক মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। প্রায় ৯০ শতাংশ টিকা। টিকা প্রদান রয়েছে। দ্বিতীয় ডোজের পর এখন বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে।
‘এই মহামারি শুধুই নয়, দেশের অর্থনীতি নীতি করেছে। মানুষের জীবনযাত্রা নেতিবাচক ফলছে। মহামারিজনিত ক্ষয়ক্ষতি কাটার উঠার জন্য আমার সরকার সাধ্যমত চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা ২৮টি প্যাকেজের মাধ্যমে ১ তারিখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি সংখ্যা প্রণোদনা প্যাকেজ পাস করেছি। টানা ৬ কোটি ৭৪ লাখ মানুষ উপকৃত হয়েছে এবং প্রায় প্রতিষ্ঠান উপকৃত হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১৮ হাজার।
দেশবাসীকে নববর্ষের বন্ধর
দেশ বাংলা নতুন-বৈশাখী রাজনীতিবিদ শেখকে। একই সঙ্গে সাধনার রত্ন রমজান মহোদয় সকল ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিকে সত্যবাদী মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানান।
সর্বজন তিনি গভীর শ্রদ্ধা জানাবেন সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতীয় পার্টি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। স্পোর্টস জাতীয় চার বার, তারিখের ৩০ শহিদ এবং ২ নির্যাতিত মা-বোনকে।
শান্তিপূর্ণ শ্রদ্ধা জানান সকল বীরের প্রতি। চতুর্দশ, ১৯৭৫ প্রথম আগস্ট ১৫ আগস্টে হামলাকদের হাতে তুলে বংমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার সঙ্গে সমন্বয় শহিদদের।
একাভানাভাইরা মহামারির মধ্যে আপনজন হারদের প্রতি সমবেদনা জানান। এ ছাড়া যোগদের রুহের মাগরাত এবং আত্মার শান্তি করেন।
শেখ বলেন, এ ভূখণ্ডের বছরের ঐতিহ্য সংস্কৃতি, এবং কৃষ্টির বাহাক এদেশের বাংলা জন সমর্থন। বিভিন্ন ধর্মে-বর্ণে বিভক্ত পদ্ধতির ও কৃষ্টির জায়গায় সব বাংলা এবং অভিন্ন। আঘাত-প্রতিঘাতে অনেক ঐতিহ্যবাহী মারাও পলা বৈশাখ নববর্ষ উদয় এখনও স্ব-মহিমায় উল্লেখ আছে। ক্লাসিলে ক্লেদ-গ্লানি, হতাশা ঘোষণা এদিন সব বাংলা নতুন আনন্দ-উদ্দীপনায় মেতে লাগান।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা