তাসকিনা ইয়াসমিন
ভারত সারাবিশ্বে এখন আলোচিত হচ্ছে তাদের সিটিজেনশিপ এমেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট (সিএএ) এবং এনআরসির ব্যাপারে। বিষয়টা হচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম আমি ঘনিষ্ঠভাবে ফলো করছি কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যমও বলতে পারছে না কি কারণে এটা মোদির করার প্রয়োজন হলো। অনেকে বলছেন যে, যেহেতু ভারতের অর্থনীতি ৪৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দূর্বল অবস্থায় রয়েছে এর মাধ্যমে মোদি এবং বিজেপি রাজনীতি করার চেষ্টা করছে এবং এর মাধ্যমে মানুষের মনে ভাব জাগাবার চেষ্টা করছে। ভাব জাগিয়ে তুলে যে ভারত হিন্দুদের রাষ্ট্র এখানে মুসলমান তারা জায়গা পাবে না। বা বহিরাগতরা ভারতে আসছে ইত্যাদি ইত্যাদি কথা বলার চেষ্টা করছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক ফায়দা উঠানোর চেষ্টা করছে।
একইসাথে মানুষ যাতে অর্থনীতির কথা বেশি না বলে কিন্তু এর বাইরে গেলে এবং এটা কতটা লাভবান হচ্ছে মোদির জন্য সেটা হচ্ছে প্রশ্ন। কারণ, এক হচ্ছে মোদি ঝাড়খণ্ডে হেরে গেছে। এটা ঠিক যে, ঝাড়খণ্ডে হিন্দি ভাষাভাষীর চেয়ে অন্য ভাষাভাষির মানুষ রয়েছে বেশি। কিন্তু বিজেপি তো ওখানে ক্ষমতায় ছিল। দেখা যাচ্ছে যেটা, ওখানকার রাজনৈতিক বিশ্লেষক যারা ছিল তারা যেটা বলছে যে স্থানীয় বিষয়গুলােই কিন্তু সবচেয়ে বেশি পাত্তা পাচ্ছে।
এবং জাতীয় বিষয় পাত্তা পাচ্ছে না। জাতীয় বিষয় বলতে এনআরসি আর সিএএকে বোঝা যায়। ভারতের যদি রাজনৈতিক নির্বাচনকে বোঝা যায়, কংগ্রেস অনেকদিন পরে বেশি সীট পেয়েছে এবং কংগ্রেস এখন বোধহয় সাতটা প্রদেশে তারা ক্ষমতায় আছে। এটা ঠিক বুঝে উঠা যায় না যে এটাতে রাজনৈতিক কি সুবিধা হচ্ছে। কারণ জাতীয় নির্বাচন হতে তো চার-পাঁচ বছর বাকি আছে। সেই চার-পাঁচ বছরে ভারতের কি রাজনৈতিক সুবিধা হবে এনআরসি আর সিএএ করে এটা কেউ বলতে পারছে না। এটা হলো একটা দিক।
দ্বিতীয়ত হলো, অর্থনীতি থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিবে এবং এটা হলো জাতীয়তাবাদী, হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিষয় ভাববে এটা কিন্তু খুব যুক্তিতর্কে টেকেনা কারণ ভারতের যে অর্থনৈতিক অবস্থা এটা কিন্তু যথেষ্ট চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের জন্য। এবং ভারতে মোদী বলেছে যে খারাপ দিন আসে ভাল দিন আবার আসবে। মোদীর তো ক্ষমতায় আসার ভিত্তিই ছিল তো যে গরীব মানুষের অবস্থা আমি ভাল করব। এখানে কংগ্রেসের সময় অনেক চুরিচামারি হয়েছে। কিন্তু সবকিছুই তো সমান অবস্থায় রয়েছে।
আমি এটা কয়েকবার আগেও লিখেছি যে ব্যবসায়িক শ্রেণির আস্থাটা মোদীর তো হারিয়ে যাচ্ছে। যে পরিমাণ ব্যবস্থা ওখান থেকে লাটে উঠছে, যে পরিমাণ ব্যাংকারাপ্সি হচ্ছে এটা কিন্তু আগে কখনও হয়নি। যেকোন মন্দার সময় এ ঘটনাটা ঘটতে বাধ্য। সে কারণে কোন কারণে মোদির এটা লাভ হচ্ছে সেটা কেউই বুঝতে পারছে না।
দুইটা বিষয় উল্লেখ করি, সৈকত দত্ত বলে একজন উনি এশিয়া টাইমস এ লিখছেন। উনি বলছেন মোদি যে মুসলমানদেরকে বলছে যে তোমাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। এ কারণে এনআরসির করার ব্যাপারে আমরা ভাবছিনা। এটার সঙ্গে অমিত শাহর যে কথাবার্তা তার মধ্যে অনেক গড়মিল রয়েছে। তো সত্যি কথা বলতে কি, অনেক বিশ্লেষক এটা বলছেন যে অমিত শাহকে চাকরিচ্যুত করা উচিত। কারণ সে একবছর ধরে এনআরসির কথাগুলো বলছে। সেদিক থেকে মোদি বলছে যে আমরা এনআরসির কথা ভাবছিনা। কিন্তু আসামের যেটা হচ্ছে মূল জায়গা যেখানে ঝামেলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে কিন্তু অলরেডি একটা বিশাল ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হয়েছে। এবং দ্বিতীয় একটি ডিটেনশন সেন্টার তৈরির কাজ চলছে।
তাতে বোঝা যায় মোদি এই জায়গায় এই এনআরসিটা প্রয়োগ করবে, আসামে তো বটেই এবং আসামে প্রয়োগ করার কথা না ভাবলে এত টাকা দিয়ে ডিটেনশন সেন্টার বানানোর কোন মানে হয়না। সেখানে যাদেরকে তারা বলছে যে ভারতীয় না। অন্য দেশ থেকে আসা। যারা মুসলমান তাদেরকে এই জায়গায় তাদের রাখা হবে। কিন্তু এতে ভারতের লাভটা কি হবে? কারণ আমরা বাংলাদেশ যেমন বাংলাদেশে দরজা খুলে ২শ, ৫শ, হাজার খানেক পাঠিয়ে দেয়া যায়। বাংলাদেশ তো অনেক সহ্যের দেশ। আমাদের দেশে কয়েক হাজার পাঠিয়ে দিলেও খুব একটা কিছু হবে না। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে যিনি শেখর গুপ্ত, যিনি ভারতের অন্যতম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সম্পাদক ছিলেন, উনি বলছেন যেটা ব্র্যান্ড ইন্ডিয়া এত ড্যামেজড আর কোনদিন হয়নি।
কারণ ভারতকে পশ্চিমা দেশগুলো বলছিল এই হচ্ছে এমন একটা দেশ যেখানে চীনের ঠিক বিপরীত। কিন্তু এখন এই আইন করার পরে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে, বেশ কিছু রাজনীতিবিদের উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, যে এইরকম একটা পাগল ছাগল বুদ্ধি কোত্থেকে এলো। এটা কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না যে, ভারত যে উদারতার একটা প্রতীক হিসেবে নিজেকে সবসময় তুলে ধরেছে সেই ভারতে এই আইনটা হচ্ছে। এখন এটা যদি হয়, তাহলে ভারত লাভবান কি হচ্ছে এই প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি উঠছে। এখন আমাদেরকে মেনে নিতে হবে এই কথাটা অদ্ভূত লাগলেও যে কেউ বলতে পারছে না এটাতে কি লাভ হবে?
এখন অনেক মানুষ আহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যাও অনেক। প্রায় হাজার খানেক মানুষ আহত হয়েছে। ১৫ জন মারা গেছে এবং বিভিন্ন প্রদেশে এটার বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন মমতা ব্যানার্জীকে ঘায়েল করার জন্যে । এটা খুব কঠিন যে মমতা তো মাত্র একটা মাত্র প্রদেশ। তাও দূর্বল একটা প্রদেশ। মমতাকে ঠিক করার জন্য এতকিছু করতে হবে। বা কেউ বলছে নর্থের জন্য। এটা তো আসলে সাউথ ও ইস্ট ইন্ডিয়ার ঝামেলা।
যেটা সংকটের বিষয় আসাম। আসামে কিন্তু হিন্দু মুসলমান বিষয় নেই। আসামে হচ্ছে বহিরাগত আর আদি আসামি। আদি আসামি যাদেরকে অহম বলা হচ্ছে, আসাম গণ পরিষদের সদস্য। তারা তো বাঙালি বিরোধী। অতএব, যদি বাঙালিকে আসামের লোকেরা খেদায় তাহলে তো তারা পশ্চিমবঙ্গে এসে দাঁড়াবে। শুধূ যে আমাদের কাছে আসবে তা না। পশ্চিমঙ্গেও যাবে। তাহলে সেইটা যদি হয় মমতার মধ্যে সংকট হবে। বাংলাদেশে ধরা গেল কিছু আসবে। বাংলাদেশ হয়ত ঝামেলা করবে না। কিন্তু গোটা অঞ্চলটায় যেটা হয়ে যাচ্ছে অস্থিরতা বেড়ে যাচ্ছে। অস্থিরতা বাড়লে বাংলাদেশের উপর এর প্রভাব পড়বে। আমি প্রায় তিন মাস আগে একটা লেখা লিখেছিলাম ভারতের ক্যারামান পত্রিকায় এটা সাধারণত বলা হয়, স্টাবলিশমেন্ট বিরােধী পত্রিকা। সেখানে আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন লোকের সঙ্গে আলাপ করে বলেছিলাম এটা বাংলাদেশের জন্য একটা বড় সমস্যা হতে পারে। যদি বহু মানুষ আসে। বহু মানুষ আসলে দুইটা সমস্যা। এক হচ্ছে এখন যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে ভারত বিরোধী মনোভাব বাংলাদেশে এত বেশি প্রবল ছিলনা। সবসময় বাংলাদেশের মানুষ কিছুটা ভারতবিরোধি। কিন্তু এখন যে ভারত বিরোধিতা এটা কোনদিন ছিলনা। দ্বিতীয়ত, এর পরে কি হতে পারে, যদি মুসলমানদের ওখান থেকে খেদায় তাহলে আমাদের এখান থেকে হিন্দু খেদাও একটা ঢেউ উঠতে পারে বিশেষ করে যেসব সংগঠন আমাদের দেশে এখনও সক্রিয় রয়েছে এবং ক্রমেই যেটা হয় ঠিক ভারতেই যে মনোভাবটা রয়েছে এই মনোভাবটা পোষণ করা মানুষেরা তখন সক্রিয় হয়ে উঠবে।
চাপটা উঠবে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপরে। তিনি যেটা করলেন দুই মন্ত্রীকে পাঠালেন না, এটা কিন্তু খুব আনপ্রেসিডেন্টেড। এরকম সাধারণত হয়না। ভারতের সঙ্গে তো আমরা সুুসম্পর্ক রাখি। তাহলে প্রধানমন্ত্রীকেই সবল হওয়ার জন্য তাকে চীনের দিকে হাত বাড়াতে হবে। এবং অবধারিতভাবে সিএএ আর এনআরসির জন্য চীনের প্রভাব এই অঞ্চলে বেড়ে যাবে। চীনের যে কতটা প্রভাব বেড়ে যাবে তার একটা বড় উদাহরণ হচ্ছে রোহিঙ্গা পাঠাবার পরে চীনই কিন্তু প্রধান শক্তি হয়ে রয়েছে আমাদের দেশে। সেই চীন যদি ভারতের পশ্চিমাংশে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হয় তাহলে তো চীন আরও সুযোগ নেবে। অতএব, চীন সবল হবে। ভারতের সমস্ত পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হচ্ছে চীনের সঙ্গে তারা কম্পিটিশন করতে চায়। কিন্তু সেই কম্পিটিশন হবে কি করে, যদি চীনকে সবাই পছন্দ করে। আবার শেখর গুপ্ত’র কথা রেফার করে বলছি, যে বাংলাদেশ হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে বন্ধুভাবাপন্ন দেশ। আমরা সবচেয়ে বন্ধুবৎসল। আমাদের সঙ্গে যদি সম্পর্ক খারাপ হয় ভারতের সঙ্গে একটা দেশ থাকবে না এই অঞ্চলে দক্ষিণ এশিয়ায় যার সঙ্গে ভারতের ভাল সম্পর্ক আছে। বস্তুতপক্ষে যে সংকটটা, যেটার জন্যে ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশ্লেষকেরা,আমার বন্ধুর মধ্যেও রয়েছে, বলছে যে অনেক কৃতজ্ঞ নিউ দিল্লি। সেটা হচ্ছে আসামের যে জঙ্গী সংগঠনগুলাে আছে সেগুলোকে একসময় এখানে সুযোগ দেয়া হতো।
সেটা বন্ধ করে দিয়েছে শেখ হাসিনা। এইটা যদি হয়, এই বিষয়টা যদি আসে, তাহলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে আদিবাসী সেভেন সিস্টারস এ যদি এইটাকে কেন্দ্র করে যে ঝগড়াটা তাদের বহুদিন ধরে রয়েছে, যে রাগ দু:খটা তাদের কেন্দ্রীয় ভারতের প্রতি রয়েছে সেটা তো বেড়ে যাবে। এবং স্বাভাবিকভাবেই তখন বিভিন্ন আঞ্চলিক দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবে। সরকারিভাবে হয়ত বাংলাদেশ সরকার দেবে না কিন্তু শেখ হাসিনা তো রাজনীতিবিদ, শেখ হাসিনা তো প্রধান। তিনি কি দেখবেন না! তিনি তো নিশ্চয় চাইবেন না যে মানুষ তাকে দেখুক একজন ভারতপন্থী মানুষ হিসেবে। দেখা অসম্ভব। এই অবস্থাতে ভারতের বন্ধূ কে থাকবে এই অঞ্চলে? ভারত তো সম্পূর্ণরূপে নিজেকে বন্ধুহীন হওয়ার একটা পথ বার করেছে। বিষয়টা হলো এখনও আমরা বুঝতে পারছিনা ভারত কেন এটা করেছে? কারণ ভারতের কোন দরকার ছিলনা। কেন দরকার ছিল না আমি এটা বলি। ভারত সরকার হিসাব দিয়েছে যে গত বিশ বছরে তারা কয়েকশ মানুষকে তারা নাগরিকত্ত দিয়েছে। এই নাগরিকত্ত্ব দিয়েছে এর মধ্যে পাঁচশ থেকে হাজার মুসলমান রয়েছে। এখন কথা হচ্ছে, যদি ভারত সরকারের এই আইনের অধিকারটা থাকে যে, যে কাউকে সে নাগরিকত্ত্ব দিতে পারে তাহলে আলাদা করে এই আইনটার কি প্রয়োজন ছিল? এটা কিন্তু আমার প্রশ্ন না। এটা ভারতীয় গণমাধ্যমের বিশ্লেষকদের প্রশ্ন।
অতএব, আমার মনে হয়, আমাদের অপেক্ষা করে দেখতে হবে এটাতে আসলেই ভারত লাভবান হচ্ছে কিনা! তবে, আমার মনে হয়, ভারতের যে রাজনৈতিক যারা এসেছেন তারা বোধহয় যতটা দূরদর্শী হওয়ার প্রয়োজন ততটা নাও হতে পারে। এমন ভাবনাটা থাকা দরকার। বাংলাদেশকে যেটা করতে হবে বাংলাদেশতো দূর্বলতার উপর ভিত্তি করে টিকে থাকে, বাংলাদেশ তো সবার সঙ্গেই খেলবে। বাংলাদেশ কারো সঙ্গেই ঝগড়া করা উচিত না। বাংলাদেশের ভেতরে এখন আমাদের অহংকার করার মতাে অবস্থা হয়ে গেছে। আমাদের দেশে অন্তত যাই হোক, আঙ্গুল তুলে তুমি আমার দেশের লোক না, তুমি যাও এইরকমটা করিনা। আমাদের যেটা হয়, সামাজিক পর্যায়ে হয়। চোর, ডাকাতরা দখল করার চেষ্টা করে। কিন্তু সামাজিকভাবে আমার মনে হয় এই মুহুর্তে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে, পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি মিলেমিশে থাকার প্রবণতা আছে। সেটা আমাদেরকে টিকিয়ে রাখতে হবে এবং আমাদের প্রয়োজন যেটা হচ্ছে যে আমাদের বন্ধূ হতে চাইবে আমরা তাদের সঙ্গেই বন্ধু হবো। আমার স্বার্থকে ক্ষতি না করে অন্যের স্বার্থকে ক্ষতি না করে বাংলাদেশ এটাই করবে।
# আফসান চৌধুরী, লেখক, সাংবাদিক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক, শিক্ষক-ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
: তাসকিনা ইয়াসমিন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, লাল সবুজের কথা ডটকম।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা