বিদেশে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে অনেকে এইচআইভিতে আক্রান্ত হন। সে কারণে সতর্ক থাকার জন্য বিদেশ যাওয়ার আগে কর্মীদের পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যশিক্ষা দিতে হবে, যেন তারা এইডসে আক্রান্ত না হন।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় একথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এসটিডি প্রোগ্রামের পরিচালক ডা. আমিনুল ইসলাম। দিবসটি পালন উপলক্ষে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর একটি রালীর আয়োজন করেছে।
এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘এইডস নির্মূলে প্রয়োজন, জনগণের অংশগ্রহণ।’ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে এইচআইভি নির্মূলে অংশীদারিত্ব আরও বাড়াতে হবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এইডস-এসটিডি কন্ট্রোল শাখা জানান।
অভিবাসীদের মাধ্যমে নতুন করে এইচআইভি সংক্রমণ বেড়েছে। এটা আমাদের জন্য নতুন একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, মাদক সেবনকারী এইডস আক্রান্তদের শনাক্ত করা তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ, তবে অভিবাসীদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হচ্ছে না। বিদেশ ফেরত ব্যক্তিরা সারাদেশে ছড়িয়ে আছেন এবং তাদের শনাক্ত করা কঠিন। কারা, কোথায় যাচ্ছে, কারা ফিরছে– এদের সংখ্যাটা কেবল তখনই জানা যায়, যখন তারা বিভিন্ন অসুখের জন্য পরীক্ষা করাচ্ছেন।
২০১৮ সাল পর্যন্ত দেখা গেছে, আক্রান্ত রোগীর এক তৃতীয়াংশ রোগী অভিবাসী। আর ২০ শতাংশ গৃহবধূ। এ অবস্থায় অভিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি ও দেশে ফেরত আসার পর প্রয়োজনীয় পরীক্ষার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
অধিদফতর সূত্রে আরও জানা যায়, বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভি পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। সেই থেকে গত বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত দেশে মোট ছয় হাজার ৪৫৫ জন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে এক হাজার ৭২ জন মারা গেছেন। ধারণা করা হয় দেশে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজারেরও বেশি।
সর্বশেষ ২০১৫-১৬ সালের সার্ভিলেন্স অনুযায়ী দেশে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার তিন দশমিক ৯ শতাংশ, যা বিগত বছরের তুলনায় বেড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিরায় মাদকগ্রহণ, নারী যৌনকর্মী, সমকামী, ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে এই হার এক শতাংশের মতো বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এসটিডি প্রোগ্রামের পরিচালক ডা. আমিনুল ইসলাম এইচআইভি পজিটিভ মায়ের সন্তানদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কতটুকু জানতে চাইলে বলেন, মায়ের থেকে সন্তানের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৩০ শতাংশ। আর যদি মাকে ওষুধ দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে হার নেমে আসে পাঁচ শতাংশে। আবার যদি মা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাহলে তা বেড়ে ১০ শতাংশে চলে যায়।
এইচআইভি পজিটিভ হওয়া মায়েদের ৭০ শতাংশ সন্তান কেন পজিটিভ হবে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নির্ভর করে ভাইরাল লোডের (রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ) ওপর। যদি ভাইরাল লোড কম থাকে, তাহলে বেঁচে যাবে। আর যদি বেশি ভাইরাল লোড বেশি থাকে তাহলে সন্তানের সংক্রমণের শঙ্কা থেকে যায় বলে জানান তিনি।
জানা যায়, ২০১৮ সালে নতুন করে এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮১ বাংলাদেশি আর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১৮৮ জন।
# রিপোর্ট এবং ছবি : সৈয়দ রাশিদুল হাসান।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা