অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দাওয়িদ মালানের সেঞ্চুরি, বেয়ারস্টো ও রুটের হাফ সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ১০ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২২৭ রানে গুটিয়ে যায়। লিটন-মুশফিক ফিফটি করলেও বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ম্যাচের ভাগ্য পাল্টাতে পারেনি টাইগাররা।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ভারতের ধরমশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের দেয়া ৩৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। রিচ টপলির ইন সুইং বল জুনিয়র তামিমের ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্লিপে জনি বেয়ারস্টোর হাতে ধরা পড়ে। আউট হওয়ার আগে ২ বলে করেন ১ রান।
সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তও পারেননি কিছুই করতে। নিজের খেলা প্রথম বলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা চালান সাকিব আল হাসান ও লিটন কুমার দাস। কিন্তু, টাইগার অধিনায়কও স্বাচ্ছন্দ্যে। ৯ বলে মাত্র ১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম তিন উইকেটই নেন রিচ টপলি। এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। আগের ম্যাচে দারুণ খেলা এ অলরাউন্ডার উইকেটের পেছনে জস বাটলারকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। মিরাজের উইকেট নেন ক্রিস ওকস।
বাংলাদেশের ব্যাটাররা আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন লিটন। শুরু থেকেই শট খেলায় বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ডানহাতি এই ওপেনার। ৩৮ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১-তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন লিটন। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন ‘এলকেডি’। তবে তিন অঙ্কে যেতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। ওকসের অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার ডেলিভারিতে আগ বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৭৬ রানের ইনিংস খেলে।
লিটন ফেরার পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিক। আদিল রশিদের বলে লং অফে এক রান নিয়ে ৬১ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি। হাফ সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিক। টপলির বলে কাট করতে গিয়ে ডিপ থার্ডম্যানে থাকা রশিদের হাতে ধরা পড়েন ৫১ রান করা এই মিড অর্ডার ব্যাটার। হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেতে পারতেন তাওহিদ হৃদয়ও। তবে লিয়াম লিভিংস্টোনের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিতে গিয়ে আউট হন ৩৯ রান করে।
আরেক ব্যাটার শেখ মেহেদী বোল্ড হন রশিদের গুগলিতে। শেষ দিকে মার্ক উডের গতিময় বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ১২ রান করা শরিফুল ইসলাম। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন তাসকিন আহমেদ। ১৫ রান করা তাসকিনকে বোল্ড করেন স্যাম কারান। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট পান রিচ টপলি। এছাড়াও ক্রিস ওকস নেন ২টি উইকেট এবং ১টি করে উইকেট নেন স্যাম কারান, মার্ক উড, লিভিংস্টোন ও আদিল রশিদ।
এর আগে, টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ইংল্যান্ড। জনি বেয়ারস্টো এবং মালান গড়েন ১০৭ বলে ১১৫ রানের জুটি। বেয়ারস্টোকে বোল্ড করে ইংল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আউট হওয়ার আগে বেয়ারস্টো খেলেন ৫৯ বলে ৫২ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চারের মার।
তবে চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন বাংলাদেশের বিপক্ষে বরাবরই ভালো করা দাওয়িদ মালান। মেহেদি হাসানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১০৭ বলে ১৪০ রান করেন তিনি। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৬ চার ও ৫ ছক্কায়।
বেয়ারস্টো ফেরার পর জো রুটের সঙ্গেও শতরানের জুটি গড়েছেন মালান। অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন জো রুটও। শরিফুলের বলে মুশফিকের কাছে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে আটটি চার ও এক ছক্কায় ৬৮ বলে ৮২ রান করেন রুট। তবে এরপরে দলের হাল ধরতে পারেননি অন্য কোনো ব্যাটার। অধিনায়ক বাটলার ও হ্যারি ব্রুক দু’জনেই আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ২০ রান করে।
ইংল্যান্ডের হয়ে ছয়ে ব্যাট করতে নামা লিয়াম লিভিংস্টোন গোল্ডেন ডাক মেরে বোল্ড আউট হয়েছেন শরিফুলের বলে। আটে নামা স্যাম কারানও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৫ বলে এক ছক্কায় ১১ রানে মেহেদির শিকার হন তিনি। ৭ বলে ১১ রানে আদিল রশিদকেও ফেরান মেহেদি। তাসকিনের শিকার হওয়ার আগে ক্রিস ওকস করেন ১১ বলে ১৪ রান।
ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে চারটি উইকেট নিয়েছেন স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান। তিনটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। অধিনায়ক সাকিব ও তাসকিন নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা