মেয়রের ভাষ্যমতে, আক্রান্তদের ৯৮-৯৯ শতাংশেইর ‘ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গু’ হচ্ছে, যা সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে চলে যায় এবং এতে তেমন ক্ষতির কারণ থাকে না।
তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এবার ডেঙ্গু আগের চেয়ে অনেক বেশি মারাত্মক হয়ে এসেছে। দ্রুত হাসপাতালে না আনলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এল ই ফাতমী বলেছেন, এবার যে ধরনের রোগী আসছে তাদের মধ্যে ডেঙ্গু হেমোরেজিক এবং শক সিনড্রোম বেশি পাচ্ছেন তারা।
মশা মারতে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ের পরও বাড়ছে ডেঙ্গু
এবার ডেঙ্গুতে মাত্র দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র সাঈদ খোকন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ জুন পর্যন্ত ৪৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল, যাদের মধ্যে দুজন মারা যান।
এরপরে আরও অন্তত তিনজনের মৃত্যুর বিষয়ে জানা গেছে, যাদের মধ্যে একজন চিকিৎসকও রয়েছেন।
সচিবালয়ে এই সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ছাড়াও বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছিলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সব রকমের উদ্যোগ চলমান রয়েছে, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি।
“ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে এখনও যায়নি এবং খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কমে আসবে। এটাতে (ডেঙ্গু) আতঙ্কিত হবার মতো কোনোই কারণ নেই এবং আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হয়নি।”
খোকন বলেন, গত জানুয়ারি থেকে সারা দেশে দুই হাজার ১০০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
“এরমধ্যে এক হাজার ৮৭৫ জন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় গেছেন, চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩০০ জন, দুইজন মারা গেছেন। ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ৯৮-৯৯ পারসেন্ট, যা সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে চলে যায়, এটাতে তোমন কোনো ক্ষতির কারণ থাকে না, আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই।”
সাঈদ খোকন বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু মশা একটা আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার মনে হয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা বেশি, যদিও মাত্র মৌসুম শুরু হয়েছে, ডেঙ্গুর মৌসুম শেষ হয়নি।
“রুটিন ওয়ার্কের বাইরে বিশেষ কার্যক্রম শুরু করি। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সায়েন্টিফিক সেমিনারের আয়োজন করে করণীয় নির্ধারণ করি। …প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ ও কার্যক্রমের সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু কিংবা চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।”
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম চলমান থাকার কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, জুমায় ইমামরা খুতবায় বয়ান দিচ্ছেন, শিক্ষকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা অ্যাসেম্বিলিতে বাচ্চাদের এ বিষয়ে সচেতন করে তুলছেন।
“আমরা ইতোমধ্যে কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দিয়েছি। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে চারটি ভাগে ভাগ করে একেকটি এলাকা থেকে মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুশীল সমাজসহ সাতজন করে নাগরিক প্রতিনিধি নিয়ে একটি ওয়ার্ডে ২৮ জন কমিউনিটি অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা বিষয়গুলো তদারকি করছেন। আমাদের স্প্রে-ম্যান যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে সহজেই চিহ্নিত করতে পারছি।”
১৫ জুলাই থেকে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম
ডেঙ্গুসহ বর্ষা মৌসুমে যেসব রোগ বেশি হয় সেগুলোর চিকিৎসা দিতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার সব ওয়ার্ডে আগামী ১৫ জুলাই থেকে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম নামানো হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র খোকন।
তিনি বলেন, “১৫ জুলাই থেকে ৪৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পাড়া-মহল্লাভিত্তিক ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান নেবে। তার আগে এলাকাবাসীদের জানিয়ে দেওয়া হবে যদি কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে থাকে বা ডেঙ্গু না হলেও যদি ঠাণ্ডা, কাশি, জ্বরসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন পড়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার মোবাইল টিম থেকে স্বাস্থ্যকর্মী ও ডাক্তাররা বিনামূল্যে তাদের চিকিৎসা দেবেন এবং ওষুধ সরবরাহ করবেন।
“ওই টিম কোনো রোগীকে হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন মনে করলে মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, শিশু হাসপাতালসহ নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে এবং চিকিৎসার ব্যয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বহন করবে।”
১৫ জুলাই একটি হটলাইন চালু করা হবে জানিয়ে খোকন বলেন, মেডিকেল টিমে গিয়ে কেউ চিকিৎসা নিতে না পারলে হট লাইনে ফোন করলেই স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা বাসায় চলে যাবেন।
NB:This post is copied from bangla.bdnews24.com
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা