অনলাইন ডেস্ক
সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অন্যান্য বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সেখানে কী উপায়ে, কোন প্রক্রিয়ায় কাজ শুরু করা হবে, কর্নারে কী কী ঠাঁই পাবে—এসব নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।
সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে অবস্থিত জাদুঘরে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন করা হবে। সেখানে কী কী জিনিস এবং বিষয় স্থান পাবে সেটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
সংশ্লিষ্টদের আশা, আইন অঙ্গনে প্রজন্মের পর প্রজন্মে জাতির জনকের জীবন ও ইতিহাস তুলে ধরার কাজ করবে প্রস্তাবিত এ কর্নার
জানা গেছে, আদালত ও বিচারাঙ্গন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন পরিকল্পনা, বিচার বিভাগ নিয়ে তার চিন্তা-চেতনার আলোকে যা যা থাকা প্রয়োজন তার একটি তালিকা তৈরি করে কর্নারটিতে রাখা হবে। যেন দেশের মানুষ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জাতির জনকের বিষয়ে আরও ভালোভাবে জানতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের বিষয়ে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমি জানি সুপ্রিম কোর্টের জাদুঘরে মহান পুরুষ শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বঙ্গবন্ধু কর্নার করার কথা রয়েছে। আমি বিষয়টি অবগত।’
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণাধীন, বিচারপতিদের বিষয়। তারপরও বঙ্গবন্ধু কর্নার করা হলে সেটি খুব ভালো বিষয় হবে বলে আশা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ‘‘ইতিহাসের মহানায়ক’’ নামে একটি বই বের করেছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক বিষয় আছে। সুপ্রিম কোর্ট ওপেন করা, সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে তার বিভিন্ন বক্তব্য—এগুলো সবকিছু প্রদর্শন করা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারবে। দেশ ও বিচার বিভাগের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান কী, তিনি কী কী কাজ করেছেন সেগুলো মানুষ জানতে পারবে। এতে মানুষ ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে উপকৃত হবে।’
‘জাতির জনকের স্মরণে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হলে তা হবে একটি বিশাল উদ্যোগ এবং রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে এটি থেকে যাবে’—বলেন রাষ্ট্রের এ প্রধান আইন কর্মকর্তা।
২০১৪ সালে সর্বোচ্চ আদালতের নতুন ভবনে স্থাপন করা হয় সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘর
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বঙ্গবন্ধু কর্নার করা হবে, সেটি অবশ্যই খুব ভালো উদ্যোগ। আমরা চাই পরবর্তী প্রজন্ম জাতির জনকের ইতিহাস ও জীবনী জানুক এবং তার আদর্শকে ধারণ করুক।’
সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তাকে সম্মান দেখানো এবং ঐতিহ্য ধারণ করাও খুবই ভালো উদ্যোগ।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লা হিরু বলেন, ‘আমাদের ঢাকা আইনজীবী সমিতির (বার) লাইব্রেরিতেও জাতির জনকের স্মরণে একটি কর্নার তৈরি করা হয়েছে।’
এর আগে, বিচারাঙ্গনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং সম্মান ধরে রাখতে ২০১৪ সালে সর্বোচ্চ আদালতের নতুন ভবনে স্থাপন করা হয় সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘর। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন জাদুঘরটি উদ্বোধন করেছিলেন। অবশ্য তখন এতোটা সৌন্দর্যমণ্ডিত ছিল না জাদুঘরটি। ক্রমে বাড়ছে এর আকর্ষণ ও সৌন্দর্য। যদিও সুপ্রিম কোর্টে একটি জাদুঘর থাকার বিষয়টি সাধারণ মানুষ তেমন জানে না। মামলা বা অন্য কোনো প্রয়োজনে আদালতে গেলে অনেকেই একবার জাদুঘরে ঘুরে আসেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু কর্নার করা হলে সেটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে। একইসঙ্গে মানুষের আগ্রহের একটি কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে সুপ্রিম কোর্ট জাদুঘর।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জাদুঘরটিতে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, মহাত্মা গান্ধীর ছবি, বঙ্গবন্ধুর সংরক্ষিত একটি বই, পূর্ব পাকিস্তান আমলের বাংলা টাইপ মেশিন, ইংরেজি টাইপ মেশিন, পুরনো গেস্টেটনার মেশিন, পূর্ব পাকিস্তান সময়ের প্রধান বিচারপতির ব্যবহারের ব্যান্ড, গাউন ও উইগ, হাইকোর্টে ব্যবহৃত দেয়াল ঘড়ি, চেয়ার, বিচারপতিদের ব্যবহৃত ড্রেসিং টেবিল, দোয়াত-কলম ও নিব, এজলাসে ব্যবহৃত চেয়ার-টেবিল, চেম্বারে ব্যবহৃত চেয়ার, ইজিচেয়ার ও হাতে লেখা বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান।
এছাড়া রয়েছে কিছু ফরম, ওকালতনামা, ক্যালেন্ডার এবং তালপাতায় সংস্কৃত ভাষায় লিখিত রায়। রয়েছে দেশের প্রধান বিচারপতিদের সফরের সময় ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশের বিচারপতিদের দেয়া উপহার সামগ্রীও।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা