উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জন্য রেকর্ড পরিমাণ ৬ হাজার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ ৬৪ জাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। যা গত অর্থবছরে বছরের বাজেটের তুলনায় ৫ হাজার ৩৩৫ কোটি ৮০ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৭৬২ কোটি ৮২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে এক হাজার ৩৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
গতকাল সোমববার সকাল সাড়ে ১১টায় শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে বিশাল ওই বাজেট ঘোষণা করে মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বাজেট বক্তব্যে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখযোগ্য আয় ধরা হয়েছে কর খাত থেকে ১৫৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। রেইট থেকে ৯৪ কোটি ৯১ লাখ, ফিস ২ কোটি ৫৪ লাখ, ইজারা থেকে ৫ কোটি ৭০ লাখ, অন্যান্য খাতে ৭ কোটি ৮৭ লাখ, নির্মাণাধীন ভবনের দোকান বরাদ্ধ থেকে ১৮ কোটি, উন্নয়ন খাতে ১১ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি আয় ধরা হয়েছে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প সমূহ থেকে। এ খাত থেকে পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৩৪২ কোটি ৩০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। পানি শাখা থেকে ১৮ কোটি ২৭ হাজার, সরকারী উন্নয়ন তহবিল থেকে উন্নয়ন সহায়তা মঞ্জুরি ১০৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
মেয়র বলেন, ব্যয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এ টাকায় রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ড, হাটবাজার, কবরস্থান, শৌচাগার, আঞ্চলিক কার্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও মেয়র ও কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সংস্থাপন ব্যয় বাবদ ৫৩ কোটি স্বাস্থ্য পয়ঃপ্রণালী খাতে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি, কনজারভেন্সি খাতে সাড়ে ৫৫ কোটিসহ জেনারেল এসেসমেন্ট, শিক্ষা ও ক্রীড়া, বিভিন্ন ক্রয়, পানি সরবরাহ ইত্যাদি খাতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্ধ রাখা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগামি ৬ মাসের মধ্যে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে পুরোদমে উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। ২০২০ সালের মধ্যে গাজীপুর সিটির উন্নয়ন কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে। দায়িত্ব পালনের মাত্র ৯ মাসের মধ্যে সকলের সহযোগিতায় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা সরকারিভাবে বরাদ্দ পেয়েছি। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গাজীপুরের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করতে গিয়ে যেসব নাগরিকদের জমি রাস্তার মধ্যে চলে যাচ্ছে তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স নেয়া হবে না এবং তাদের নাম সিটি কর্পোরেশনে সংরক্ষণ করা হবে। রাস্তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের যোগ্য লোক থাকলে তাদের চাকরি ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
মেয়র বলেন, গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে নাগরিকদের ওপর কোনো অতিরিক্ত ট্যাক্স আরোপ করা হয়নি। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে নতুন ট্যাক্স নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনগণের মতামত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে। নগরীর করদাতাগণ অতিসহজেই ঘরে বসে যাতে হোল্ডিং ট্যাক্স এবং লাইসেন্স ফি প্রদান করতে পারেন সে লক্ষ্যে অটোমেশন পদ্ধতিতে অনলাইনে ট্যাক্স পরিশোধ ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের ব্যবস্থা করা হবে। শিগগির গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাংগঠনিক কাঠামো, চাকুরি বিধিমালা অনুমোদন হবে। এতে নগরীর সকল কাজে গতি আনা সম্ভব হবে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে প্রতিদিন অপসারণযোগ্য ময়লা আবর্জনার পরিমাণ প্রায় ৬ শ মেট্টিক টন। প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি কম থাকলেও এসব ময়লা আবর্জনা অপসারণ করে আগের তুলতায় নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রাহাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাজেট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম শামসুন্নাহার, পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. এসএম তরিকুল ইসলাম ও সিটি করপোরেশনের অর্থ ও বাজেট সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর আব্বাস আলী খোকন।
অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর, মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র নাগরিকন্দ ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
NB:This post is copied from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা