গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করার মাধ্যমে টেকসইভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র উদ্যোগ বিকাশে আরো বেশি অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ, কারিগরি ও বাজারজাতকরণ সহায়তার আহ্বান জানিয়ে শেষ হলো উন্নয়ন মেলা ২০১৯-এর আনুষ্ঠানিকতা।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অফ ফেইমে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান।
প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির টেকসই উন্নয়নে যতো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সফলভাবে কাজ করছে, পিকেএসএফ তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য। তিনি পিকেএসএফ উন্নয়ন মেলাকে জাতীয় উন্নয়নের একটি জাজ্জ্বল্যমান উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পিকেএসএফ গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে ।
বিশেষ অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, পিকেএসএফ বলে কম, করে বেশি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পল্লী উন্নয়নকে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। পিকেএসএফ সেই শর্ত পূরণে কাজ করছে।
তিনি জানান, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম, বিশ্বে ৩৪তম।
বিশেষ অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার অতিদরিদ্র ও পশ্চাৎপদ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে পিকেএসএফ-এর কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। উন্নয়ন মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের প্রদর্শিত পণ্যের বাজার দেশের বাইরেও সম্প্রসারণ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, পিকেএসএফ-এর লক্ষ্য পিছিয়েপড়া, পিছিয়ে থাকা এবং পিছিয়েরাখা মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও তাদের মানবমর্যাদা নিশ্চিত করা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণমানুষের দোরগোড়ায় বিভিন্ন ধরনের বহুমাত্রিক, দীর্ঘমেয়াদী, মানবকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
স্বাগত বক্তব্যে পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত এমন ৪৫০ ধরনের পণ্য এবারের উন্নয়ন মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে।
মেলায় প্রতিদিন গড়ে ৪৫ হাজার দর্শনার্থী উপস্থিত ছিলেন এবং এ পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করার মাধ্যমে তৃণমূল থেকে মেলায় অংশগ্রহণ করা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করেছেন।
পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোঃ জসীম উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, সাংসদ, সচিবসহ উন্নয়ন মেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আগত বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে ধন্যবাদ জানান।
পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন মেলা ২০১৯ আয়োজনে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন কমিটি, অংশগ্রহণকারী সকল সহযোগী সংস্থা ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশে আরব আমিরাতের আরও বড় আকারের বিনিয়োগের প্রত্যাশা
অনুষ্ঠানে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ প্রণীত Perspectives on People-centred Development: With Particular Reference to Bangladesh শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মানব উন্নয়নের নানাবিধ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ড. আহমদের লেখা প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও গবেষণাপত্রের সঙ্কলন ঘটেছে এই গ্রন্থে। উন্নয়ন মেলায় প্রদর্শিত পণ্যসমূহের মধ্যে তিনটি পণ্য ‘সম্ভাবনাময় পণ্য’ হিসেবে নির্বাচিত হয়: ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)-এর মোজারেলা চিজ, পরিবার উন্নয়ন সংস্থা-এর ভার্টিক্যাল ক্র্যাব কালচার, এবং দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা-এর পরিবেশবান্ধব ও টেকসই নির্মাণ সামগ্রী। এছাড়া, ‘সেরা স্টল’ শ্রেণিতে প্রথম পুরস্কার পায় গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র, প্রথম রানার-আপ গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা, ও দ্বিতীয় রানার-আপ উন্নয়ন প্রচেষ্টা।
সবশেষে ছিল, জনপ্রিয় ব্যান্ডদল দলছুট-এর মনোজ্ঞ পরিবেশনা।
ফেসবুক :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা