থ্রিডি জেব্রা ক্রসিং নিয়ে উন্মাদনার কিছুদিন পরই বরিশাল শহরে প্রায় সকল রাস্তা বাস্তবের থ্রিডিতে পরিণত হলেও এটা নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথা নেই। বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
বরিশাল নগরীর ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট, ড্রেন-খাল সংস্কার ও নাগরিক অধিকার আদায়ে ১৫ নভেম্বর থেকে বাসদের দাবি পক্ষ শুরু উপলক্ষে ফকিরবাড়ি রোড বাসদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মনীষা চক্রবর্তী বলেন, থ্রিডি জেব্রা ক্রসিং নিয়ে উন্মাদনার কিছুদিন পরই বরিশাল শহরে প্রায় সকল রাস্তা বাস্তবের থ্রিডিতে পরিণত হলেও বিষয়টি নিয়ে যেন কারোর কোন মাথা ব্যাথা নেই। একটা বিভাগীয় শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো মাসের পর মাস এভাবে ভাঙ্গা থাকার পরও সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো কতটা নির্বিকার থাকতে পারে তার একটা উদাহরণ তৈরি করেছে আমাদের বরিশাল।
মনীষা বলেন, এমনকি থ্রিডি জেব্রা ক্রসিং নিয়ে পেপার-পত্রিকা, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে যত নিউজ এসেছে তার সিকি ভাগও রাস্তার এই ভয়াবহ সংকট নিয়ে আলোকপাত করা হয়নি। বিভিন্ন সড়কে এক-দুই ফুট গর্তে পানি জমে মাছ চাষের মতো পরিস্থিতিও খুব সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রায় ৮০% রাস্তাই এখন চলাচলের অনুপোযোগী। ফলে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই বরিশালবাসীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। লোক দেখানো দু-একটা রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হলেও তা চলছে একেবারেই মন্থর গতিতে।
আরও পড়ুন : শিশুবান্ধব ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা করা হবে : রাজউক চেয়ারম্যান
চক্রবর্তী বলেন, বরিশাল নগরীতে শিরা-উপশিরার মতো অনেকগুলো খাল রয়েছে, যার প্রায় সবগুলো সংস্কারের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ খাল ময়লা-আবর্জনার ড্রেন আর মশা উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই খালগুলো সংস্কারের কোন কার্যকর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। বরিশালের ড্রেনেজ ব্যবস্থা যে কতটা নাজুক তা বোঝা যায় ভারী বর্ষনের পর। বেশি বৃষ্টি হলেই নগরীর বিভিন্ন এলাকাতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন দরিদ্র বা নিম্নবিত্ত এলাকাগুলোতে হাজার হাজার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
তিনি বলেন, বরিশালের পাড়া-মহল্লাতে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ, পাঠাগার না থাকায় শিশু, কিশোর, তরুণ-যুবকদের দেহমনে বিকশিত হওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নাই। আবার বিভিন্ন এলাকাতে মাদক, জুয়া, ইভটিজিং বন্ধে প্রয়োজন আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া।
তিনি বলেন, প্রতি বছরই হোল্ডিং ট্যাক্সসহ বিভিন্ন করের বোঝা বৃদ্ধি করা হলেও নগরবাসীর ন্যুনতম সুযোগ-সুবিধাগুলো তো বাড়ছে না বরং তা যেন দিন দিন কমছে। তাই অবিলম্বে রাস্তাঘাট, খাল, ড্রেন সংস্কারসহ নিম্নোক্ত দাবিতে স্থানীয় কাউন্সিলর এবং সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর ভূমিকা নেয়ার দাবিতে আগামী ১৫-৩০ নভেম্বর ‘দাবি পক্ষ’ ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ছয়টি দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হচ্ছে – হাল্ডিং ট্যাক্স কমাও, নাগরিক সুবিধা বাড়াও!, অবিলম্বে বরিশালের সকল রাস্তাঘাট, ড্রেন সংস্কার কর। জনদুর্ভোগ কমাও, জেলখাল, সাগরদি খাল, নবগ্রাম খাল, আমানতগঞ্জ খালসহ নগরীর সকল খাল সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগি কর, প্রত্যেক এলাকায় মাদক, জুয়া, ইভটিজিং বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, সুষ্ঠু বিনোদনের জন্য এলাকায় এলাকায় খেলার মাঠ, পাঠাগার নির্মাণ কর, বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া রিক্সা, অটো, হকার উচ্ছেদ বন্ধ কর।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন
বাসদ বরিশাল জেলার আহবায়ক ইমরান হাবিব রুমন, বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য বাবুল তালুকদার, শহীদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলার সংগঠক জাহাঙ্গীর হোসেন দিদার।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল জেলার সংগঠক তরিকুল ইসলাম ইশাত, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বরিশাল জেলার সহ-সভাপতি মাফিয়া বেগম প্রমুখ।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা