অনলাইন ডেস্ক
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনার টিকা চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। টিকাটির ৩ কোটি ডোজ পেতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের হয়ে চুক্তি করে দেশীয় কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। সে অনুযায়ী টাকাও পরিশোষ করা হয় ঢাকার পক্ষ থেকে।
চুক্তি অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল নাগাদ সব মিলিয়ে মোট ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে চুক্তির শর্তানুযায়ী প্রথম মাসে আসে ৫০ লাখ ডোজ। কিন্তু দ্বিতীয় চালানে আসে মাত্র ২০ লাখ ডোজ এপ্রিলে আসে দেশে। যদিও প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ আসার কথা।
পরবর্তীতে ভারত একতরফাভাবে টিকা রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। এতে টিকা সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করে সেরাম। এ অবস্থায় ভারত সরকারের প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।
আজ রোববার সংসদ ভবনে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ প্রস্তাব করা হয়। সেইসঙ্গে প্রতিশ্রুতি মাফিক করোনার টিকা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা।
ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা আনতে প্রচেষ্টা জোরদার করার সুপারিশ করা হয়েছে। রোববার (৯ মে) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সংসদীয় কমিটি একাধিক সোর্স থেকে টিকা আনার ব্যবস্থা করতে বলেছিল। কিন্তু কেন একটা সোর্স থেকে আনা হলো, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে তারা এখন একের অধিক সোর্স থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছে। ভারত থেকেও আশা করছে জুলাইয়ে পাবে। আমেরিকা থেকে পাওয়ার চেষ্টা করছে। রাশিয়া ও চায়না থেকে আনার চেষ্টা তো করছেই।
তিনি বলেন, সেকেন্ড ডোজ কমপ্লিট করার জন্য ভারতের যে টিকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত আছে, সেটা আনা যায় কিনা, সেই উদ্যোগ দ্রুততার সঙ্গে নিতে বলেছি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি অনুযায়ী টিকা না দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে বলেছি।
কমিটির সভাপতি বলেন, করোনা ভ্যাকসিন কেন আনা যাচ্ছে না, এ সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে। আমরা বলেছি, শুধু চেষ্টা করলে হবে না। টিকা আনতে হবে। অন্যথায় দেশ একটা সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে।
যারা এক ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয়বার দিতে হবে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই মাসের দিকে ভারত থেকে টিকা আসবে। যুক্তরাষ্ট্রে কিছু টিকা অতিরিক্ত আছে। তারা সেখান থেকেও আনার চেষ্টা করছে। এছাড়া চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা আসবে। এতে সমস্যার সমাধান হবে।
ভারতের ভাইরাসের ধরন বাংলাদেশে পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে কমিটির সভাপতি বলেন, কমিটির পক্ষ থেকে ভারতের সাথে লকডাউন শক্তিশালী করতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে বিজিবিকে শক্তিশালী টহল জোরদার করতে বলা হয়েছে।
কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শেষে মে মাসের শেষ সপ্তাহে সংসদীয় কমিটিকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া ইরাকের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার ও ইরাকে কর্মরত বাংলাদেশি মানবসম্পদকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানের সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবে মিল্লাত ও কাজী নাবিল আহমেদ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা