শীত আসতে আর বেশি দেরি নেই। আর তাই যশোরের গাছিদের মধ্যে খেজুর গাছের যত্ন নেয়ার ধুম বেড়েছে। কেননা, গাছের যত্ন যত ভাল হতে তত বেশি মিলবে রস। আর তা থেকেই তৈরি হবে দেশখ্যাত খেজুরের গুড়।
খেজুরগুড় খ্যাত যশোরের ৮ উপজেলায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীতকালের নতুন ধানের চাল দিয়ে বিভিন্ন প্রকার পিঠা পায়েস বানাতে খেজুরের রস ও গুড়ের কোন জুড়ি নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এ জেলার গুড়-পাটালির এতিহ্য দেশের সর্বত্র রয়েছে।বিদেশেও চলে যায় এ গুড়। জেলার খাজুরা গ্রামের অধিকাংশ মানুষ খেজুর গাছের রস সংগ্রহ এবং খেজুর গাছ চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
জেলার ৮টি উপজেলায় খেজুর গুড় তৈরি হলেও বাঘারপাড়া উপজেলা, মনিরামপুর, শার্শা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা এবং সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি গুড় তৈরি হয়।জেলায় ২লক্ষাধিক খেজুরগাছ রয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।এসব গাছ হতে প্রতি বছর ১হাজার মেট্রিক টনের বেশি গুড় উৎপাদন হয়ে থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা বিরেন্দ্র নাথ মজুমদার বাসসকে জানান,এ জেলায় আগের তুলনায় খেজুর গাছ অনেক কমে গেছে। সরকারিভাবে খেজুর গাছ রোপণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।বিভিন্ন পতিত জমি, বাড়ির চারপাশে এবং চাষযোগ্য জমির আইলের উপর দিয়ে খেজুর গাছ লাগানোর জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এদিকে, খেজুরের রস আসার সময় যতই বাড়ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকি। গতবছর এই রোগে ভারতে মারা গেছে কয়েকজন। এবার যেন এই পরিস্থিতি তৈরি না হয় তাই আগেই উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারা গাছিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কিভাবে খেজুরের রসকে বাদুড় থেকে দূরে রাখা সম্ভব হবে। তারা গাছিদের বোঝাতে একমাত্র সিদ্ধ করে খেজুরের রস না খেলেই কেবল এই রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি রয়েছে।
যশোরের খাজুরা গ্রামের গাছি আব্দুল জলিল বলেন, নির্ভেজাল খেজুর গুড়ের চাহিদা অনেক বেশি।সঠিক মানের এককেজি গুড় দুশ’ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে।খেজুর গুড়ের সঙ্গে নারিকেল মিশিয়ে তৈরি সুস্বাদু নারিকেলের পাটালি আড়াইশ’ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হয়ে থাকে।খেজুর গাছ সংরক্ষণে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতার দাবি করেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এমদাদ হোসেন সেখ জানান, এ জেলায় ব্যাপকভাবে খেজুর গাছ রোপণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জেলা ও মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা