অনলাইন ডেস্ক
আর বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া যায় মার্চের ৮ তারিখে। সেই থেকে আজ (৪ জুন) পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৫৬৩ এবং মৃত্যু ৭৮১।
গত বছর ডিসেম্বরে যখন এই ভাইরাসের আগমন হয় তার আগে কেউ এইসব ভাইরাস সম্বন্ধে কিছু জানতো না বা কোন ধারণা রাখত না। আসলে এই ব্যাপারে কেউ প্রস্তুতও ছিলনা। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের সনাক্তর তুলনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩৫ শতাংশ কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যাও কম নয়।
বিশেষজ্ঞরা এরজন্য থ্রি টির উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন. থ্রি টি হল টেস্ট, ট্রেস এবং ট্রিট। আরেকটা ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেছে আর সেটা হল এগ্রেসিভ টেস্ট। এই টেস্টের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া অনেক সাফল্য পেয়েছে কারণ চীনের পর সবচেয়ে আক্রান্ত দেশ ছিল দক্ষিণ কোরিয়া।
বাংলাদেশ করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল হয়তো তার মধ্যে কিছুটা সমন্বয়হীনতা ছিল। শুরুতে এটা হতেই পারে। কারণ এটার অভিজ্ঞতা প্রথমে কারোরই ছিল না। যাইহোক এই ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিল তা সবার জানা। গত ২৬শে মার্চ থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত কয়েকদফা সাধারণ ছুটি, গণপরিবহন বন্ধ, সব অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এর অন্যতম.পৃথিবীর অন্য দেশের মতো আমরা পেলাম এক নতুন অভিজ্ঞতা। জরুরী ভিত্তিতে কিছু অফিস চলছিল ভার্চুয়ালি। কিন্তু কতদিন এভাবে চলে? এদিকে আক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
অফিস ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান না খুললে যে অর্থনীতির চাকা থেমে যাবে, তাই অর্থনীতির চাকা সচল করতে হলে সাধারণ ছুটি বা অন্যভাবে বললে ‘লকডাউন’ খুলে দিতেই হত। কেননা না খুললে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট আরো সঙ্কটে পড়তো।
আমার ধারণা সরকার এই কারণে সীমিত আকারে অফিস, ব্যাংক যানবাহন, গার্মেন্টস ও অন্যান্য ফ্যাক্টরি খুলে দেবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। পরিস্থিতি বুঝে হয়তো সামনে আরো রিলাক্স হবে। আমার ধারনা অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ভাইরাস মোকাবেলার একমাত্র কারণ মনে করা উচিত নয়। এতদিন ‘লকডাউন’ও চলতে পারে না। এখন করোনা মোকাবেলায় ‘লকডাউন’ শিথিলের পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন ও বাংলাদেশ সরকারের হেলথ গাইডলাইন মেনে চলতে হবে আমাদের জনগণকে। আমাদেরকে এগ্রেসিভ টেস্ট করাতে হবে, পাশাপাশি ডেইলি মনিটরিং সেল টা যাতে প্রপার ইউটিলাইজ হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে এবং তা অত্যন্ত কঠোরভাবে মনিটরের কারণে কিন্তু টোলারবাগ এবং শরিয়তপুরে সাফল্য এসেছে।
আমাদের মনে রাখতে হবে ‘লকডাউন’ বা সাধারণ ছুটির মতো এক কঠিন সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছিলো। আমাদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে করোনা মোকাবেলায়। আমরা যদি সহযোগিতা করি তবে ভালো ফলাফল আসবেই। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতি দেশ বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুর কে বলা হচ্ছে সবচেয়ে করোনা হটস্পট। এখানকার জনগণকে একটু সচেতন এবং কেয়ারফুল থাকতে হবে এবং সরকারের উচিত এখানে সবচেয়ে কঠিন ভাবে দৃষ্টি দেওয়া ও মনিটর করা। এসব ঘনবসতি এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুবই অসম্ভব ব্যাপার এবং তাই অনেকে মানছে না বা পারছেনা তাই আমাদের কিছুটা কষ্ট হলেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকতে হবে সব সময় এবং কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে এই ভাইরাস দুই-একটি দেশে নিয়ন্ত্রন আসলেও এখনও অনেক দেশে ঊর্ধ্বগতিতে আক্রমণ করছে বিশেষ করে ব্রাজিলে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরাও অনেক আগে থেকে বলে আসছে যে, এ রোগের প্রাদূর্ভাব এত তাড়াতাড়ি যাবে না।
অবশ্য করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে এটা একটা আশার দিক। অনেক গবেষণা চলছে, এমনকি বাংলাদেশে এর জেনোম সিকুয়েন্সিং এর কাজ চলছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন এ কাজগুলো করছে, হয়তো আমরা এর সাফল্য পাবো। কিন্তু একটু সময় লাগবে। তাই আমার ধারনা করোনা ভাইরাস এর সাথে আমাদের সাবধানতার সহিত সহঅবস্থান করে চলতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না এর প্রতিষেধক বের হচ্ছে।
আর লকডাউন কোন সমাধান নয়। এতদিন লকডাউন চলতে পারে না আর এই লকডাউন শিথিলের বিকল্প নেই অন্তত দেশের অর্থনীতির জন্য। এমনিতেই ভাইরাসের কারণে পৃথিবীতে একটা মন্দার সম্ভাবনা বিশেষজ্ঞরা দিয়ে রেখেছেন। সো হোপ বেস্ট ফর আওয়ার কান্ট্রি। সবচেয়ে বড় কথা দেশের উপর কিছু নাই। দেশ ভালো থাকলে সব ভালো থাকবে। আমাদের জয় হবেই হবে ইনশাল্লাহ।
আবু মোহাম্মদ মাছানী, সাংবাদিক
fblsk
করোনা পরিসংখ্যান এর লাইভ আপডেট দেখুন
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা