অনলাইন ডেস্ক
এই রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৮০ জন নারী এবং ৯৭ জন পুরুষ ও শিশু রয়েছে বলে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মাহবুব আলম তালুকদার শুক্রবার দুপুরে ২৮০ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছিলেন।
পরে তিনি বলেন, “নৌবাহিনীর সদস্যরা নৌকা থেকে রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে ২৮০ জনের কথা বলেছিল। তাদের তত্ত্বাবধানেই গত রাতে এই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন গুণে দেখেছে উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গা মোট ২৭৭ জন।”
সাগরে ভাসতে থাকা রোহিঙ্গা বা সমুদ্রে এ ধরনের যাদের পাওয়া যাবে তাদের ভাসানচরে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় পুলিশ পরিদর্শক, সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ও কনস্টেবল মিলিয়ে ৪৯ জন পুলিশ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে বলে এসপি আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) তন্ময় দাস জানান, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ভাসানচর রোহিঙ্গা পুনর্বাসন ক্যাম্প স্বপ্নপুরীতে রাখা হয়েছে।
কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার গভীর রাতে বাংলাদেশের জলসীমায় রোহিঙ্গাদের বহনকারী ওই কাঠের নৌকাটি ভাসতে দেখা যায়।
এরপর নৌকাটিকে বৃহস্পতিবার নিয়ে যাওয়া হয় নোয়াখালীর ভাসানচরে, যেখানে এর আগে আরও ২৮ রোহিঙ্গাকে পাঠানো হয়েছিল গত ৪ মে।
নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, এই রোহিঙ্গারা অভুক্ত ছিলেন এবং তারা তাদের খাবার ও পানি দিয়েছেন।
“এখন পরিকল্পনা তাদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা। পরে সরকার তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।”
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এ লক্ষ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সরকার বলছে, রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সব ব্যবস্থাই ভাসান চরে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে গেলে কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্প জীবনের চেয়ে ভালো থাকবে তারা।
তবে সাগরের ভেতরে জনমানবহীন ওই চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে।
এখন করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সাগরে নৌযান থেকে উদ্ধার রোহিঙ্গাদের কোয়ারেন্টিনের জন্য ওই স্থাপনা ব্যবহৃত হচ্ছে। কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে জনাকীর্ণ পরিসরে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটলে তা ভয়ানক হয়ে ওঠার ঝুঁকি রয়েছে।
গত সপ্তাহে সাগরে একটি নৌযানে ভাসতে থাকা ২৮ রোহিঙ্গা ও এক বাংলাদেশি ‘দালালকে’ উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই চরে এখন বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্কও রয়েছে।
বাংলাদেশের জলসীমায় রোহিঙ্গাবাহী আরও কোনো নৌযান আছে কি না, সে বিষয়ে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড নজর রাখছে বলেও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
পাঁচশর মতো রোহিঙ্গাকে নিয়ে পাচারকারীরা সপ্তাহ দুয়েক আগে ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হওয়ায় রোহিঙ্গাদের ট্রলার সাগরে ভাসতে থাকে। রোহিঙ্গাদের নৌযান ভিড়তে দেবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে থাইল্যান্ডও।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশের ঊপকূলরক্ষীরা রোহিঙ্গাদের একটি নৌযান উদ্ধার করেন, যেটা দুই মাস আগে মালয়েশিয়া ফিরিয়ে দিয়েছিল। প্রায় ৩৯০ জন অভুক্ত রোহিঙ্গা ওই নৌযানে ছিলেন, যাদের অধিকাংশের বয়স ২০ বছরের নিচে। তাদের মধ্যে ১০০ জনের মতো না খেয়ে মারা যান বলে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছিলেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা