দেশের সর্বাধিক পাঠকপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন সাইফুল আলম। জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম এতদিন দৈনিকটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
শনিবার যুগান্তরের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষির্কীর আয়োজনে পত্রিকাটির স্বপ্নদ্রষ্টা ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম সাইফুল আলমকে সম্পাদক ঘোষণা করেন। এ সময় যুগান্তরের প্রকাশক সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপিও উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বরেণ্য সাংবাদিক সাইফুল আলমকে যুগান্তরের সম্পাদক ঘোষণা করায় উপস্থিত অতিথি ও সাংবাদিকরা যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। নতুন দায়িত্ব পাওয়ায় সাইফুল আলমকে সবাই শুভেচ্ছা জানান।
১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাবস্থায় সাপ্তাহিক ‘কিশোর বাংলা’য় খণ্ডকালীন এবং ১৯৭৯ সালের শেষদিকে পূর্ণকালীন সহ-সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন সাইফুল আলম। এরপর নিরবচ্ছিন্নভাবে এই পেশায়ই সাফল্যের সঙ্গে পথ চলছেন।
কিশোর বাংলার পর তিনি দৈনিক জনতায় সিনিয়র রিপোর্টার (১৯৮৩-৮৪), দৈনিক নব অভিযানে চিফ রিপোর্টার (১৯৮৫), দৈনিক ইনকিলাবে (১৯৮৬ থেকে ১৯৯৯ আগস্ট পর্যন্ত) সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দৈনিক যুগান্তরের পথচলার শুরু থেকেই পত্রিকাটির সঙ্গে আছেন সাইফুল আলম। ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি দৈনিক যুগান্তরে চিফ রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর পত্রিকাটির উপসম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পান। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সপ্তাহিক চিত্রালী, মশাল, আগামী, সন্দ্বীপসহ বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন।
সাইফুল আলম সাংবাদিকদের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেস ক্লাবের বর্তমান সভাপতি। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ২০১৭-২০১৮, দুই দফায় যুগ্ম সম্পাদক ১৯৯৫-১৯৯৬ ও ১৯৯৭-১৯৯৮ ও দু’বার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাইফুল আলম বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের দু’বার নির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কয়েক দফায় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকাস্থ বৃহত্তর কুমিল্লা সাংবাদিক সমিতির উপদেষ্টা, চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য।
সাইফুল আলম বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘চাঁদের হাট’-এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হিসেবে এক যুগ (১৯৭৯-১৯৯০) দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি শিশু কল্যাণ পরিষদের ব্যবস্থাপনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সদস্য হিসেবে কয়েক দফায় দায়িত্ব পালন করেন।
সাইফুল আলম বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের (পিআইবি) পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংবাদ সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা বোর্ডের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদেরও সদস্য।
সাইফুল আলমের প্রথম গ্রন্থ ‘ছেঁড়াপাতা’। শিশু-কিশোর গল্পগ্রন্থ, যা ১৯৮২ সালে প্রকাশিত। এর দ্বিতীয় সংস্করণ ‘নিম ফুলের ঘ্রাণ’ নামে প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ সালে। দ্বিতীয় গ্রন্থ ছড়া-কবিতা ‘হাত বাড়ালেই আকাশ’। তৃতীয় গ্রন্থ ‘কিছু ভাবনা কিছু কথা’। জাগৃতি থেকে ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয় চতুর্থ গ্রন্থ ‘গণতন্ত্র মাইনাস নয় প্লাসের প্রজ্ঞাই’। এটি দেশ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত। পঞ্চম গ্রন্থ ‘গণতন্ত্রের যাত্রা ও অন্যান্য’। পালল প্রকাশনী থেকে ২০১৯-এ প্রকাশিত হয়।
সাইফুল আলম জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন সংস্থা ২০১৭ ও শেরেবাংলা একে ফজলুল হক সম্মাননা ২০১৮ পেয়েছেন।
সাইফুল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৭৭ সালে স্নাতক ও ১৯৭৮ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু সাইফুল আলমের। এরপর মতিঝিল কেন্দ্রীয় সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সহ-সভাপতি ছিলেন।
সাইফুল আলমের জন্ম ১৯৫৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর, ঢাকার ফরাশগঞ্জে। বাবা মোহাম্মদ আলী আরশাদ মিয়া এবং মা বেগম শামসুন নাহার। স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম, পেশায় ব্যাংকার।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা