সাম্প্রদায়িকতার আগুনে যখন পুড়ছে ভারতের রাজধানী দিল্লি, সেই সময় আরও অনেকের মতো মুসলিম প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করেছেন এক হিন্দু যুবক।
প্রেমকান্ত বাঘেল নামের দিল্লির শিব বিহার এলাকার ওই যুবক জ্বলন্ত ঘরে আটকে পড়া প্রতিবেশী ছয়জন মুসলমানকে বাঁচিয়েছেন। এই কাজ করতে গিয়ে শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়ে এখন তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বলে ইন্ডিয়া টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আগে রোববার রাজধানী দিল্লিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থক ও বিরোধীদের পাল্টাপাল্টি মিছিল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার রূপ নেয়।
টানা চার দিন ধরে দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
ইন্ডিয়া টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেমকান্ত যখন প্রতিবেশী মুসলমানদের ঘর পুড়তে দেখেন তখন তিনি তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে যান। তিনি বলেন, শিব বিহারে হিন্দু-মুসলমানরা সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে, কিন্তু এই দাঙ্গা এক ভিন্ন চিত্র নিয়ে এসেছে।
দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা ছুড়ে মুসলমানদের ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছিল। ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে ওই সব ঘরে আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে ছুটে যান প্রেমকান্ত।
নিজের জীবন বিপন্ন করে ছয় প্রতিবেশীকে বাঁচান তিনি। জ্বলন্ত ঘরের মধ্যে আটকাপড়া খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর বৃদ্ধা মাকে বের করতে গিয়ে পুড়ে যান।
এই ঘটনার পর দগ্ধ প্রেমকান্ত বাঘেল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ি পাননি। প্রতিবেশীরা অ্যাম্বুলেন্স ডাকলেও তা আর পৌঁছায়নি। দগ্ধ শরীর নিয়ে সারা রাত ঘরের মধ্যে কাটাতে হয় তাকে।
সকালে তাকে নিয়ে দিল্লির জি টি বি হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্ধু-স্বজনরা। সেখানে বার্ন ইউনিটে তার চিকিৎসা চলছে।
নিজের এই অবস্থা হলেও প্রেমকান্ত বাঘেল বলেন, বন্ধুর মায়ের জীবন বাঁচাতে পেরে তিনি খুশি।
দিল্লিতে ভয়াবহ এই সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালানো মুসলিমদের আশ্রয় দিতে খুলে দেওয়া হয়েছে গুরুদুয়ারার দরজা।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা