১১ দফা দাবিতে উত্তাল ক্রিকেট পাড়া। দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সব ধরণের ক্রিকেট বয়কট করেছেন দেশের পেশাদার ক্রিকেটাররা। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমসহ প্রায় সব সিনিয়র ক্রিকেটারই যোগ দিয়েছেন আন্দোলনে। এবার তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করলেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে সংস্করণের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাও।
সোমবার দুপুর ৩টায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমী মাঠে সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন ক্রিকেটাররা। ১০ জন খেলোয়াড় নিজেদের দাবিগুলো তুলে ধরলেও উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৭০ জন খেলোয়াড়। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন না মাশরাফী। তখন থেকেই নানা ফিসফাস, তাহলে কি ক্রিকেটারদের সঙ্গে নেই তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ায় হওয়ায় এ গুঞ্জনটাও ছিল বেশ জোরালো।
তবে সব গুঞ্জনকে উড়িয়ে দিয়েছেন মাশরাফী। জানিয়েছেন না থাকার কারণও। এ আন্দোলনের কথা জানানোই হয়নি তাকে। বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন বেশ কিছু দিন থেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাই খেলোয়াড়দের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে যোগাযোগটাও খুব বেশি ছিল না। তাকে না জানানোয় কিছুটা অবাকই হয়েছেন অধিনায়ক। তবে সব ছাপিয়ে ১১ দফা দাবিতে খেলোয়াড়দের সঙ্গে আছেন বলেই জানিয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস।
আন্দোলনে খেলোয়াড়দের সঙ্গে আছেন জানিয়ে এদিন নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে লিখেছেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন করছেন যে, দেশের ক্রিকেটের এমন একটি দিনে আমি কেন উপস্থিত ছিলাম না। আমার মনে হয়, প্রশ্নটি আমাকে না করে, ওদেরকে করাই শ্রেয়। এই উদ্যোগ সম্পর্কে আমি একদমই অবগত ছিলাম না। নিশ্চয়ই বেশ কিছু দিন ধরেই এটি নিয়ে ওদের আলোচনা ছিল, প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। সংবাদ সম্মেলন দেখে আমি ওদের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
‘ক্রিকেটারদের নানা দাবির সঙ্গে আমি আগেও একাত্ম ছিলাম, এখনও আছি। আজকের পদক্ষেপ সম্পর্কে আগে থেকে জানতে পারলে অবশ্যই আমি থাকতাম।
‘মিডিয়ায় ওদের খবর দেখার পর থেকে হাজার বার আমার মাথায় এই প্রশ্ন এসেছে, যে কেন আমাকে জানানো হলো না। অনেকে আমার কাছে জানতেও চেয়েছেন। কিন্তু আমি নিজেও জানি না, কেন জানানো হয়নি।
‘তবে আমার উপস্থিত থাকা কিংবা না থাকার চেয়ে, ১১ দফা দাবি বাস্তবায়িত হওয়াই বড় কথা। সবকটি দাবিই ন্যায্য, ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের মঙ্গলের জন্য জরুরী। আমি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, ১১ দফা দাবি শান্তিপূর্ণ ভাবে বাস্তবায়িত হওয়ার পক্ষে আছি, থাকব।’
এদিকে, ১১ দফার দাবিতে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের ঘোষণার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বেক্সিমকোর ধানমন্ডির অফিসে বোর্ডের উচ্চপর্যায়ের অনানুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারা উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন।
বৈঠক থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বোর্ডে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন পরিস্থিতি নিয়ে বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলতে মঙ্গলবার দুপুরের আগে বোর্ডে যাবেন।
বেক্সিমকো অফিসে বিসিবি কর্তাদের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ক্রিকেটারদের এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সাংবাদিকদের বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা বিস্মিত, হতবাক। তাদের ধারণা—এটা ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, বোর্ডের কাছে লিখিতভাবে কোনো দাবি আকারে পেশ করলেও তা নিয়ে অবশ্যই কথা হতো। কিন্তু তা না করে সরাসরি আলটিমেটাম দেওয়া। আমরাও চাই বিষয়টির মীমাংসা হোক। এজন্যই মঙ্গলবার বোর্ডে বসব আমরা। সেখানেই হয়তো বসে সব কিছু ঠিক হবে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা