অনলাইন ডেস্ক
গতকাল সকালে বঙ্গবাজার মার্কেটের সামনে এসে ব্যবসায়ীদের হাতে সহায়তা তহবিলে অনুদানের অর্থ তুলে দেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা। বেলা ১১টার দিকে আলেয়া নামে এক হিজড়া তার হজের টাকা থেকে ২ লাখ টাকা দেন। এরপর কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার দেন ২৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির ১০ লাখ টাকা, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়রের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা, প্যানেল মেয়রের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা রয়েছে।
এরপর সেখানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের অফিসার্স ও কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এক দিনের বেতন ও ইফতারের খরচের ২ লাখ টাকা তুলে দিয়েছি।
এদিন বাংলাদেশ হিজড়া উন্নয়ন সংস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তহবিলে ২০ লাখ টাকা সহায়তা করেছে। সংস্থাটির সভাপতি কাশ্মির দিপালী হিজড়া বলেন, গত ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে আমরা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলেছি। আজকে তাদের এই বিপদের সময় আমরা ঈদের কেনাকাটা না করে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সারা দেশ থেকে এই টাকা তুলেছি।
বঙ্গবাজার পরিদর্শনে এসে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এক কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আপনারা ভেঙে পড়বেন না। এখন অন্য কিছু না ভেবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। সে জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ জন্য সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
তহবিলের মোট সংগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তহবিলে এ পর্যন্ত (রবিবার) প্রায় দুই কোটি টাকা সহায়তা সংগ্রহ হয়েছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ জানান, অনুদানের অর্থ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাদের শঙ্কা কাটছে না। তাদের একটাই প্রত্যাশা, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি ও অনুদানের অর্থ বিতরণের ক্ষেত্রে যেন স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
মো. মিরাজ কাজী, আশরাফুল ও আব্দুল লতিফসহ এখানকার বেশ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীও তাদের শঙ্কার কথা জানান। মিরাজ কাজী বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে সহায়তা আসছে। তহবিলের বাইরেও নাকি অনেক আর্থিক সহায়তা এসেছে। শুনেছি কেউ কেউ নাকি তা পেয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো কিছু পাইনি। তহবিলের সহায়তার জন্য তালিকা তৈরি হচ্ছে। নাম দিয়েছি। কিন্তু সহায়তা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত শঙ্কা কাটছে না। ব্যবসায়ী আশরাফুল বলেন, তালিকার জন্য ফরম পূরণের পাশাপাশি আমাদের কাছ থেকে দোকানে নম্বর, নাম, ভিজিটিং কার্ডসহ আমার জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি জমা নিয়েছে। আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে সহায়তা পাব। এখন আমাদের চাওয়া অনুদান বিতরণে স্বচ্ছতা থাকে।
মিরাজের মতো আশরাফুলও বলেন, শুনেছি তহবিল ছাড়াও অনেকে সহায়তা দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ তা পেয়েছেও। কিন্তু আমি পাইনি। এসব কারণে সহায়তা পাওয়া নিয়ে অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যেই এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে।
এদিকে ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, তালিকা তৈরি করে মেয়রকে দেওয়া হবে। তালিকা তৈরিতেও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সুতরাং যারা এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী তারা অবশ্যই সহায়তা পাবেন।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনও বলেন, বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করছে। সর্বশেষ তিনটি ইউনিটের ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি হয়েছে। একটি ইউনিটের (মহানগর) তালিকা বাকি। আগামীকাল (সোমবার) সন্ধ্যার মধ্যে তা সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। এ পর্যন্ত দুই হাজার ৯৬১ ব্যবসায়ীর তালিকা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তহবিলটি আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও মেয়র তত্ত্বাবধান করছেন। আমরা বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতিও বিষয়টি দেখছি। সুতরাং এখানে স্বচ্ছতার ঘাটতির কোনো সুযোগ নেই। যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা অবশ্যই সহায়তা পাবেন।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা