শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে হয়তো দেশের জন্য অনেক কিছু করত বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে এ কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আজকে শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে হয়তো দেশের জন্য অনেক কিছু করত। মাঝে মাঝে মনে হয় ৫৪ বছর বয়সে কেমন হতো দেখতে । বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত চোখে থেমে যান তিনি। শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটা শিশুরই একটা ইচ্ছা থাকে, বড় হয়ে কী হবে! রাসেলেরও শখ ছিল, বড় হয়ে আর্মি অফিসার হবে। ‘এ নিয়ে তাঁর অনেক আগ্রহ দেখেছি। যখন গ্রামে যেত, সেখানে গিয়ে শিশুদের নিয়ে খেলতো। তাঁর ভিতরে একটা দরদী মন ছিলো। তিনি বলেন, যখন সে আব্বা বলে ডাকতো তখন মা বলতো, আমি তোমার আব্বা। আমাকেই আব্বা ডাকো। সেই জন্যই সে জেলখানায় গিয়ে আব্বাকেও আব্বা বলে ডাকতো, আম্মাকেও আব্বা বলে ডাকতো। বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেন, যেদিন জেলখানায় যেতাম আগের দিন থেকেই সে (রাসেল) খুবই অস্থির থাকতো। আমাদের ভাই-বোনদের কাছে ছুটে আসতো। কি যেন বলতে চাইতো। কিন্তু তাঁর ব্যথাটা কিছুই বলতে পারতো না। মা বলতেন, আমিই তোমার আব্বা।’ ‘ছোট্ট শিশু রাসেল পিতার স্নেহ বঞ্চিত ছিল। আমরা তো ছিলাম-ই। বাসায় নেতাকর্মীরা আসতেন-তখনও সে আব্বার কাছে ছুটে যেতো। না জানি আবার আব্বাকে ছাড়া থাকতে হয় তাঁর।’ ‘জয়কে খুবই আদর করতো রাসেল। তখন মুক্তিযুদ্ধ চলছে। রাসেল তাঁর কাছে তুলা রাখতো, যখনই গুলির শব্দ হতো রাসেল সেই তুলা জয়ের কানে দিতো। যাতে জয় ভয় না পায়।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আব্বা যেখানেই যেতেন, রাসেল সঙ্গে থাকতো। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ওই বাড়িতে একটি প্রাণীও বেঁচে থাকতে পারেনি। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই আমি আর রেহানা। ভেবেছিলাম- হয়তো রাসেল বেঁচে রয়েছে।’ জননেত্রী বলেন, ১৫ আগস্টের এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না বলেও আইন করা হয়। তারা শুধু একটা দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করেনি। নারী-শিশুও হত্যা করেছে। ‘কিন্তু তাদের রক্ষা করে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ’৮১ সালে (১৯৮১) দেশে ফিরে এলাম, তখন মামলা পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি। আমি আমার বাবা-মা, ভাই হত্যার বিচার পাবো না। আমাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।’ তিনি বলেছেন, আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যত। শিশুদের প্রতি কোনো অন্যায়-অবিচার বরদাশত করা হবে না। যারা শিশু নির্যাতন করবে তাদের অবশ্যই সাজা পেতে হবে। কঠোর সাজা পেতে হবে। তুহিন হত্যা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কী আর্শ্চয ব্যাপার বাবা হয়ে সন্তানকে হত্যা করে অন্যকে ফাঁসানোর জন্য।শিশু নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তোমাদের পাশে দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী শিশু দেখলে তাদের অবহেলা করো না। কারণ তারাও তো তোমাদের মতোই মানুষ। এতে তাদের তো কোনো দোষ নেই। এটা অমানবিকতা ও নিষ্ঠুরতা। সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিশুরা যাতে আধুনিক মনস্ক হয়ে গড়ে উঠতে পারে সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রত্যেকটি শিশুর জীবন যেন অর্থবহ হয়, আমরা সে ব্যবস্থা নিয়েছি। ‘শিশুদের যাতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ঝরে পড়া কিংবা প্রতিবন্ধীদের জন্যও নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার।’
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা