মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে করা মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে আজ। রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) এ মামলার বাদী পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া।
মামলাটির শুনানি শুরু হবে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায়। প্রথমদিনের শুনানি চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। তিনদিনের শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে।
গত ১১ নভেম্বর ইসলামি সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে আফ্রিকার ওই দেশটি এই মামলা দায়ের করে।
গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল আবুবাকর তামবাদাউ তার দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন। অন্যদিকে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্ব দেবেন তার দেশের পক্ষে।
ওই শুনানিতে গাম্বিয়া ও মিয়ানমার নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে। তবে এতে সু চি রোহিঙ্গাদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যায়িত করে এ গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাইবেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে গত ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এ মামলা করে গাম্বিয়া। নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ ওই মামলার শুনানি আজ (১০ ডিসেম্বর) শুরু হয়ে চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ এই মামলার সরাসরি অংশগ্রহণকারী পক্ষ না হলেও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের একটি প্রতিনিধি দল ওই শুনানিতে উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া কানাডা বা ওআইসি’র পক্ষ থেকেও প্রতিনিধিরা এবং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সুশীল সমাজের সদস্যরা শুনানির জন্য হেগ-এ উপস্থিত থেকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করবেন।
গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা, ধর্ষণ এবং জাতিগত নিধনের জন্য মিয়ানমারকে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
যদিও বিশ্লেষকগণ মনে করছেন, আগামী বছরের মিয়ানমারের নির্বাচনকে সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের জন্যই অং সান সু চি নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার মত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আইসিজে-তে অং সান সু চির নেতৃত্বদানকে স্বাগত জানিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্য মিং থুন সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এটি তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ এবং তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য একটি প্রচ্ছন্ন আশীর্বাদ।
এদিকে শুনানি শুরুর একদিন আগে বিশ্বজুড়ে ‘বয়কট মিয়ানমার’ প্রচারণা শুরু করেছে রোহিঙ্গা-সমর্থিত মানবাধিকার সংগঠনগুলো। সোমবার এক বিবৃতিতে দ্য ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন জানায়, মিয়ানমার বয়কটের ডাক দিয়েছে ১০ দেশের ৩০টি মানবাধিকার সংগঠন।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা