বিজয়ের মাস আনন্দের মাস, বিজয়ের মাস স্বজন হারানোর মাস। বাঙালির ওপর দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে চলে আসা অন্যায়, বঞ্চনা, শোষণ ও বৈষম্যের অবসান হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের মাধ্যমে যা বাঙালি জাতির জীবনের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন।
বুধবার ( ১৮ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস ২০১৯ উপলক্ষে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। ঢাকায় ইস্কাটন রোডে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর আয়োজিত অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, মহান বিজয় দিবস একদিনে আসেনি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম বীজ বপন করা হয়। এর পর জাতির পিতার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এ দেশের আপামর জনসাধারণ বাষট্রি সালের শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ সালের ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও সত্তর সালের নির্বাচনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, নারীদের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার মাবোনেরা পেট ভরে খাবার না পেলে, ভাল কাপড় না পরলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হবে। আজ বাংলাদেশের নারীদের তৈরি কাপড় ও উৎপাদিত চাল বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। বাংলাদেশের নারীরা আজ স্বাবলম্বী। তিনি এ সময় বলেন, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, সেই নারীদের বাদ দিয়ে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব হবেনা। এ জন্য জাতির পিতা স্বাধীনতার পর পরই নারীদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেন। নির্যাতিত নারীদের চিকিৎসার জন্য ভারত, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসক এনে তাদের চিকিৎসার ও তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি আরও বলেন জাতির পিতা অসহায় ও ঠিকানহীন নারীদের বলেছিলেন, প্রয়োজনে তাঁরা ঠিকানার জায়গায় লিখবে ধানমন্ডির ৩২নম্বর।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, ১৯৭৫ জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছিল স্বাধীনতার প্রকৃত অর্জন ও সুফল থেকে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নপূরণের মাধ্যমে এ দেশের মানুষের কাছে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করছেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, সরকার ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ ও শত বছরের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন করছে। বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের গড় প্রবৃদ্ধি যেখানে ৫ দশমিক ১ শতাংশ, সেখানে বাংলদেশের গড় প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৯ সালে মাত্র ৭৫৯ মার্কিন ডলার থেকে বর্তমান ১৯০৯ মার্কিন ডলার ও দারিদ্রের হার কমে এখন মাত্র ২০ শতাংশ। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা এখন ২২,৭২৭ মেগাওয়াট যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ৪৯৪২ মেগাওয়াট। বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। খাদ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। বাংলাদেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশ। আলোচনাসভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুন নেসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার । এ সময় মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লালসবুজের কথা’র ফেসবুক পেজ :
আরও পড়ুন : রাজাকার যখন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তখন খুব খারাপ লাগে : আব্দুস সামাদ তালুকদার
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা