করোনাভাইরাস আতংকে সারাবিশ্ব যখন থমকে দাঁড়িয়েছে, আমাদের দেশের মানুষ যখন আতংকে দিন যাপন করছে, বড় বড় রাজনীতিবিদ, শিল্পপতিরা যখন ঘরের কোণায় লুকিয়ে পড়েছে, ঠিক তখনই দেখা মিললো বাংলাদেশের উত্তর জনপদের লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তবর্তী বুড়িমারী ইউনিয়নের এক মানবতার ফেরিওয়ালার।
যিনি অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ মোঃ নেওয়াজ নিশাত রহমান। যখন বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে তখনেই তাঁর ব্যাতিক্রমী উদ্দোগ আমাদের নজর কেড়েছে। যিনি বুড়িমারী ইউনিয়নের মানুষকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে মাইকিংসহ একটা স্বেচ্ছাসেবী টিম তৈরি করে দিয়েছে যেই স্বেচ্ছাসেবী টিম প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে গিয়ে লিফলেট বিতরণ করে গ্রামের মানুষকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতেছে।
এছাড়া বুড়িমারী ইউনিয়নকে জীবাণুমুক্ত রাখতে তাঁর নিজস্ব অর্থায়নে তৈরিকৃত পানির গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। সরেজমিনে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায় তিনি রাত ১২ টা পর্যন্ত অফিসে বসে থাকেন কোথাও কোন মানুষের কোন সমস্যা হলো কি না? যখনেই দেখছেন তার এলাকার মানুষের কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে তখনই তার স্বেচ্ছাসেবী টিম চলে যাচ্ছে সেই সমস্যা সমাধানের জন্য।
যিনি শুধু এইগুলো করেই ক্ষান্ত হননি বুড়িমারী বাজার, মসজিদ, মানুষের বাড়িতে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানির গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না এজন্য তিনি নিজস্ব অর্থায়নে ৩৫ টি স্প্রে মেশিন ক্রয় করে তার স্বেচ্ছাসেবী টিম দিয়ে বুড়িমারী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় নিজেই উপস্থিত থেকে জীবণুনাশক পানি স্প্রে করান।
এছাড়াও বাজার বন্ধ থাকার কারণে ও সরকারের নির্দেশ মেনে চলার কারণে বাড়িতে থেকে যদি কোন মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রয়োজন হয়, সেজন্য চেয়ারম্যান মহোদয় একটা টিম তৈরি করে দিয়েছেন, যে টিমের সদস্যদের ফোন দিলেই আপনার বাড়িতে পৌছে যাবে আপনার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।
চেয়ারম্যান আবু সাইদ মোঃ নেওয়াজ নিশাত রহমান জানান, “দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে দেশের মানুষের কাছে আমাদের একটাই চাওয়া আপনারা দয়া করে বাড়িতেই অবস্থান করুন, আপনাদের জন্য আমরা বাহিরে, আমাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য আপনারা ঘরের ভিতরে থাকুন।
তিনি সমাজের বিত্তবান মানুষগুলোর কাছে অনুরোধ করে বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সরকারের একার পক্ষে এতগুলো মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়, আমরা যদি নিজ নিজ এলাকার ১০-১৫ টা পরিবারকে খাবারের ব্যবস্থা করে দেই তাহলে মনে হয় এই সমস্যা সমাধান সম্ভব তাই আসুন সবাই মিলে নিজ নিজ এলাকার অসহায় দিন মজুর মানুষগুলোর খাবারের ব্যবস্থা করি, সরকারকে সহযোগিতা করি, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করি।
আরোও পড়তে পারেন : দেশের সব প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল কমছে