* প্রধানমন্ত্রীর প্রতি খোলা চিঠি * নিউইয়র্ক ও ভারত সফর নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে (৯ অক্টোবর’২০১৯) নানা প্রসঙ্গে তাঁর খোলামেলা মতামত দেন। এর মাঝে সাংবাদিকদের নবম ওয়েজ বোর্ড-২০১৯ নিয়ে করা প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা সাংবাদিক ও মালিকদের বিষয়। আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করেছি। মালিকেরা যদি না দেয়, তো আমি কী করবো। তথ্যমন্ত্রীকে আমি দায়িত্ব দিলাম। দেখি সে কথা বলুক’। উল্লেখ্য, সরকার প্রায় ৫ বছর পরপর সরকারি চাকুরেদের জন্য নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করে। সরকারের উদ্যোগে সে অনু্যায়ী সংবাদমাধ্যম শিল্পে সাংবাদিক ও কর্মীদের জন্যও প্রায় ৫ বছর পরপর নতুন বেতন কাঠামো বা ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা দেয়। কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হলো, সে ওয়েজ বোর্ড শুধুমাত্র ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে— বাস্তবায়ন আর হয় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ( মালিকরা যদি না দেয়,——–) মধ্যেও এর সত্যতা রয়েছে। মাননীয় গণমাধ্যম বান্ধব প্রধানমন্ত্রী, পেশাজীবী সাংবাদিক সমাজের প্রকৃত অর্থে কার্যকর কোনো অভিভাবক দৃশ্যমান নেই। সে কারণে, সাংবাদিকদের মৌলিক কোনো সমস্যারই টেকসই সমাধান হয়না। যেমন, আজ অব্দি সংবাদ মাধ্যমের জন্য কোনো নীতিমালাই প্রণয়ন হয়নি! আপনার সরকারের মাধ্যমে প্রণীত খসড়াটি আলোর মুখ দেখার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা সারা দেশের সাংবাদিক সমাজ। বেতন স্কেলটা করে দেয় সরকার। এজন্যে আমরা সরকারের কাছে যারপরনাই কৃতজ্ঞ। একইসাথে, সেটা বাস্তবায়নের শতভাগ দেখভালের মূল অভিভাবকের দায়িত্বটাও সরকারকে নিতে হবে।(উল্লেখ্য, আপনার সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭ সালে নিজ উদ্যোগে ১৫-২০টি মিডিয়া হাউজে ওয়েজ বোর্ড দেখভালের কথা বলেছিলেন)। এ ছাড়া সাংবাদিকদের যে মূল সমস্যা তা সেই তিমিরেই রয়ে যাবে। শুধু বেতন স্কেলের অঙ্ক বা ডিজিট বসিয়েই সরকারের দায়িত্ব শোধ মনে করলে সুবিচার হবে না। সাংবাদিক সমাজ অতীতের মত তাহলে বঞ্চিতই রয়ে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এ দেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা হিসেবে আপনার দায়িত্ব— অনেক বড়। অনুগ্রহ করে, ‘মালিকরা যদি না দেয়, তো আমি কী করবো’ — এ কথা বলে আপনার গুরু দায়িত্ব থেকে দূরে সরে যাবেন না। সবকিছুই কেন প্রধানমন্ত্রীকে করতে হবে? কেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের দরকার পড়বে? এমন প্রশ্নে ৯ অক্টোবরই তো বললেন আপনি ‘এই প্রশ্নটা কেন বারবার আসে। আমি সরকার প্রধান। অবশ্যই দায়িত্ব আমার আছে। আমি তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেশ চালাই না। কখন কী হচ্ছে, না হচ্ছে খোঁজ নেওয়া আমার দায়িত্ব’। সাংবাদিক বান্ধব ও সংবেদনশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে আপনার এ কথারই প্রতিফলন আমরা সংবাদ মাধ্যম শিল্পের বিরাজমান সমস্যা সমাধানে প্রয়োগ দেখতে চাই। আপনার উদ্যোগে গঠিত সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ৩৮ কোটি টাকা তহবিল থেকে অসচ্ছল বেকার রোগাক্রান্ত প্রবীণ সাংবাদিকদের নিয়মিত ভাতা প্রদানের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কল্যাণ তহবিলে এতো টাকা পড়ে আছে, অথচ কিছু টাকার অভাবে অনেক পরিবার রয়েছে নিদারুন সংকটে। ট্রাস্টের হ্যান্ডলিং সিসটেমটা আরও স্বচ্ছ করা দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সুস্বাস্থ ও কল্যাণ কামনা করি। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক।
বাবলু রহমান সাবেক নির্বাহী সদস্য ঢাকা সাব এডিটর কাউন্সিল। টেলিফোন- ০১৭৯৬-৮৫৭৮৯২। bablu.rahmanbd@gmail.com
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা