বাংলাদেশে মানবাধিকার ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে এই অবস্থায় আমাদের একত্র হয়ে সংগ্রাম করতে হবে । শনিবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পরিচালিত ‘জেন্ডার, নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন’ বিষয়ক নবম সার্টিফিকেট কোর্সের সমাপনী ও সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত উচ্চমানের। এই কোর্সের মাধ্যমে জেন্ডার সচেতনতাপূর্ণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি পাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই । তবে বাংলাদেশে মানবাধিকার ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে এই অবস্থায় আমাদের একত্র হয়ে সংগ্রাম করতে হবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, পাঁচ দশকের কর্মসময়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ভিন্ন ভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোর্সটি পরিচালনা করা এক ধরণের জেন্ডার সমতাপূর্ণ সমাজ নির্মাণের কাজ সংগঠনের। প্রতিটি শিক্ষার্থী এই কাজের সাথে যুক্ত হলেন কোর্সটি সম্পন্ন করার মাধ্যমে। কোর্সটি যে আলোকের উৎস সকলকে দেখিয়ে দিলো সেটি নারী আন্দোলনের সংগ্রামকে আরো উজ্জীবিত করবে। সংগ্রাম চালিয়ে নিতে নানা প্রতিবন্ধকতায় ও মনোবল অটুট রেখে পথ চলতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কোর্স পরিচালক সীমা মোসলেম বলেন, একটি জেন্ডার সংবেদনশীল মানব সমাজ গড়ার লক্ষেই মূলত এই জেন্ডার সার্টিফিকেট কোর্সটি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশাপাশি কোর্সটির দুইটি উদ্দেশ্যে ছিল। কোর্সে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জেন্ডার সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠবে। তারা তাদের ব্যক্তিজীবনে ও কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ ঘটাবে। একাডেমিশিয়ান এবং এক্টিভিস্টদের মধ্যে একটা সমন্বয় ঘটবে।
তিনি বলেন, জেন্ডার সংবেদনশীল মানব সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে জেন্ডার সংবেদনশীল মানব সম্পদ গড়ে তুলতে তত্ত্ব এবং বাস্তবিক প্রয়োগ এই দুই কাজের একটি সম্মিলনের প্রয়োজন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কাজগুলো হচ্ছে বহুমুখী। সহিংসতা বন্ধের জন্য মহিলা পরিষদ কাজ করে অন্যদিকে নানা রকম আইনি সহায়তাও দিয়ে থাকে।
নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য যার যার ক্ষেত্র থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় কোর্স শিক্ষক এবং বিআইডিএস এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, কোর্সের শিক্ষার পূর্ণ বাস্তবায়ন ঘটাতে শিক্ষার্থীদের ঘরে বাইরে সমানভাবে কাজ করতে হবে। জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য সন্তানদের ছোটবেলা থেকে সমানভাবে গড়ে তোলার শিক্ষা দেয় কোর্সটি। কোর্সের শিক্ষাগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এই জেন্ডার সমতার চর্চা করতে হবে।
আরও পড়ুন : শিশুবান্ধব ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা করা হবে : রাজউক চেয়ারম্যান
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মো. আশরাফুল আলম সাগর- প্রোগ্রাম অফিসার ইসলামিক রিলিফ, নূরে নির্ভানা বৃষ্টি- শিক্ষক , ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং শামীমা বেগম-এআইজি, বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার।
অনুষ্ঠানে কোর্সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার উপ-পরিষদের সম্পাদক রীনা আহমেদ । কোর্সটি ৮টি মডিউল, ৩২ টি ক্লাশ, ৪টি দলীয় কাজ, ১টি প্যানেল আলোচনা, ১টি মাঠকর্ম ও একক আস্যাইনমেন্টের মাধ্যমে কোর্সটিকে সাজানো হয়।
ফেসবুক পেজ :
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা