তাসকিনা ইয়াসমিন
যেসব শিশু বস্তি এলাকায়, ডে কেয়ার সেন্টার, এতিমখানায় থাকে তাদের রোটা ভাইরাস এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) এর ভাইরোলজী বিভাগের সহকারি পরিচালক ড. মনজুর হোসেন খান এতথ্য জানান।
তিনি জানান, ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১০ হাজার ৮শ ১৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর মধ্যে ৬৫২৮ জন অর্থাৎ ৬০ ভাগ রোটা ভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৫ জন শিশুর এই ভাইরাসে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।
হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রতি চারজন শিশুর একজন রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।
শীতকালীন মৌসুমে শিশুরা এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। বিশ্বে শিশুর মৃত্যুর চতুর্থ কারণ ডায়রিয়া। রোটা ভাইরাস পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। নবজাতক এবং শিশুরা এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হয়। শীত যত হয় রোটা ভাইরাসে শিশুর আক্রান্তের হার তত বেশি বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন : বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশু মৃত্যুর হার প্রায় ৬০ শতাংশ কমেছে : ইউনিসেফ
ডা. মনজুর হোসেন খান বলেন, ৩ মাস থেকে ২ বছরের শিশুরা বেশি এই রোগে আক্রান্ত হয়। ৬-১২ মাসের শিশুরা সবচেয়ে বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বড়রাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে, সেটার পরিমাণ খুবই কম।
রোগের উপসর্গ : শরীরে এই যাবার পরে ২/৩ দিনের মধ্যে এর সিম্পটম প্রকাশ পায়। জ্বর, বমি, তলপেটে ব্যথা, পানির মতো ডায়রিয়া হতে পারে। বারবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
শিশুরা ডায়রিয়া নিয়ে মূলত হাসপাতালে আসে। এসময় তাদের একজনের থেকে অন্যজনের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়ায়। এমনকি ডায়রিয়া হওয়ার আগেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। খাবার আগে এবং পরে হাত না ধুয়ে খেলে, হাতে এই ভাইরাস থাকা অবস্থায় হাত মুখে দিলে এই রোগ ছড়াতে পারে।
আইইডিসিআর এর পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা বলেন, যেহেতু শিশুরা নিজেদের সুরক্ষা নিজেরা নিতে পারেনা তাই আমরা মা-বাবা অভিভাবকদের সচেতন হতে বলব। তারা হাতটা ধুয়ে দিল। খাবারের ব্যাপারে সতর্ক হলো। বিশেষ করে এতিমখানার শিশুরা একসঙ্গে থাকে। তাদের কারো ডায়রিয়া হলে সেটি অন্যদের মধ্যে ছড়ায়। বাড়িতে যতটা না এই ভাইরাস ছড়ায়। শিশু যখন বাইরে খেলতে যায় তখন তার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এক্ষেত্রে শিশুর হাইজিনের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
প্রতিরোধে করণীয় : পানি, খাবার এবং হাতের স্পর্শের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় এবং এটি দীর্ঘদিন ধরে বাতাসে থাকতে পারে।
রোটা ভাইরাসের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়রিয়ার চিকিৎসাটাই এক্ষেত্রে দেয়া হয়।
বাজারে দুই ধরনের ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। রোটারিক্স এবং রোটাটেক। এইদুটি মুখে খাইয়ে দিতে হয়। এটি শিশুকে ১৫ সপ্তাহ থেকে আট মাস বয়সের মধ্যেই দিতে হয়। হাত ধুয়ে খাবার খাওয়া এবং খাবার গরম করে খাওয়ার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ফেসবুক :
# সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, লাল সবুজের কথা ডটকম।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা