অনলাইন ডেস্ক
বুধবার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা এক বার্তায় নাথান অ্যান্ডারসন বলেন, “আমি হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাইপলাইনে যেসব আইডিয়া ছিল— সেগুলোর সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। আমাদের হাতে আর নতুন কোনো আইডিয়া নেই। মূলত এ কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
আগামী ২০ জানুয়ারি শপথগ্রহণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ট্রাম্প। তার মাত্র ৫ দিন আগে হিন্ডেনবার্গ বন্ধের ঘোষণা দিলেন অ্যান্ডারসন। তবে ওয়েবসাইটের বার্তায় তিনি বলেছেন, কোনো নির্দিষ্ট উৎস থেকে পাওয়া হুমকি বা ব্যক্তিগত কারণে এই সিদ্ধান্ত নেননি তিনি।প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের গত ২৪ জানুয়ারি গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের প্রতারণা নিয়ে চাঞ্চল্যকর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউইয়র্কভিত্তিক আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। সেখানে বলা হয়, ১০ বছর ধরে শেয়ার কারসাজি এবং আর্থিক লেনদেনে প্রতারণা চালিয়ে আসছে আদানি গ্রুপ। কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বহুগুণ বাড়িয়ে এ গ্রুপ বিশাল সম্পদ গড়েছে। গত কয়েক বছরে আদানি গ্রুপের কোম্পানির শেয়ার ৫০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর থেকেই আদানি গ্রুপের সব কোম্পানির শেয়ারের দাম পড়তে শুরু করে; দীর্ঘদিন সেই পতন এখনও অব্যাহত ছিলো। এই দরপতনের জেরে কয়েক হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ খোয়ান গৌতম আদানি।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশের পর ৩৫ শতাংশ বা ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের সম্পদ হারিয়েছে আদানি গ্রুপ।
স্কুল থেকে ঝরে পড়া গৌতম আদানি গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের শীর্ষ ধনী শিল্পপতিদের একজন। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের বাসিন্দা এবং ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া থাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অন্যতম ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিও তিনি।
এই রাজনৈতিক যোগাযোগকে কাজে লাগিয়েই গত কয়েক বছরে রীতিমতো ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল আদানি গ্রুপ।
আদানিকে টেনে নামানো কারা এই হিন্ডেনবার্গ?
কর্পোরেট বিশ্বে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি পরিচিত নাম। এটি কর্পোরেট কোম্পানির অসঙ্গতি ও অন্যায়গুলো সামনে আনে এবং ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে। ২০১৭ সালে হিন্ডেনবার্গ প্রতিষ্ঠা করেন নাথান অ্যান্ডারসন। এটি একটি ফরেনসিক আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। যেটি সম্পত্তির মালিকানা, আর্থিক চুক্তি এবং আমানত বিশ্লেষণ করে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা আছে, হিন্ডেনবার্গ ‘মনুষ্য সৃষ্ট বিপর্যয়’ যেমন— আর্থিক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং অপ্রকাশিত আর্থিক লেনদেনগুলোর খোঁজ করে থাকে।
কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম খুঁজে পাওয়ার পর এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ। এরপর আর্থিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজ করতে থাকে এটি।
হিন্ডেনবার্গের প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসন যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসার ওপর স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন ডেটা কোম্পানি ফ্যাক্টসেট রিসার্চ সিস্টেমে। সেখানে তিনি আর্থিক ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কাজ করেন।
নাথান অ্যান্ডারসন ২০২০ সালে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নালকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছিলাম ওই আর্থিক ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো খুবই সাধারণ মানের বিশ্লেষণ করছিল। সবগুলো প্রায় একই রকম ছিল।’
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা