গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা
দেশে জাতীয় পুষ্টি পরিস্থিতির তুলনায় নগরীর বস্তি এলাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার জনগোষ্ঠী ও পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীদের পুষ্টি পরিস্থিতি তুলনামূলক খারাপ।
বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে ২০১৩ অনুযায়ী বস্তিবাসীদের ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এক তৃতীয়াশ এখনও খর্বকায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে এই হার ৪৯ শতাংশ (সূত্র: ইউনিসেফ-এর মাল্টি ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে; ২০১২-১৪ তথ্য অনুযায়ী)। আইসিডিডিআর,বির তথ্যানুযায়ী, কর্মরত নারী পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে প্রায়ই ৪৩ শতাংশই দীর্ঘমেয়াদী অপুষ্টির শিকার ।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুযারি) রাজধানীর কাওরানবাজারের সিএ ভবনে প্রথম আলোর কার্যালয়ে আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা: খাদ্য ও পুষ্টি প্রতিশ্রুতি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তাদের আলোচনায় এ তথ্য উঠে আসে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মুজিবুল হক।
দেশে খাদ্য ব্যবস্থার জন্য বাস্তবসম্মত ও উদ্ভাবনী উপায় অনুসন্ধান করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-২) পূরণে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার নিশ্চিতে ভবিষ্যত করণীয় ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরতে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা-গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমফ্রুভড নিউট্রিশন (এঅওঘ) ও দেশের বাংলা দৈনিক- প্রথম আলো যৌথভাবে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে।
এতে উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৭-১৮ অনুযায়ী -দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩১ শতাংশ শিশু খর্বকায়, ২২ শতাংশ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর ওজন স্বল্পতা রয়েছে। সে তুলনায় নগরীর বস্তি এলাকা, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠী ও পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীরা পুষ্টি পরিস্থিতির দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। বিশেষত: নগরে- দারিদ্র্য ও ঘনবসতি, পার্বত্য চট্টগ্রামে- দুর্গম এলাকা, খাদ্য ঘাটতি, ফসলী জমির অভাব, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক পার্থক্যের কারণে খাদ্যাভাসে পরিবর্তন এবং পোশাক শিল্পে- নারীদের কঠোর পরিশ্রম ও অসচেতনতার কারণে পুষ্টি পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নত হয়নি।
গেইন এর নির্বাহী পরিচালক লরেন্স হাদ্দাদ এর সঞ্চালনায় বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ নেদ্যারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারউয়ে, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ফুড় প্ল্যানিং ও মনিটরিং ইউনিট-এর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) বদরুল আরেফিন, বাংলদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক শাহ নেওয়াজ, গেইন এর নির্বাহী পরিচালক ডা.রুদাবা খন্দকার, একই সংস্থার পোর্টফোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মুজিবুল হক বলেন, বাংলাদেশ এখন যেভাবে এগুচ্ছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা অবশ্যই এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হব। আশা করছি, সামগ্রিকভাবে আমরা পুষ্টি পরিস্থিতিরও উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হবে।
কর্মশালায় বক্তারা-পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার ও নিরাপদ খাবার প্রাপ্তিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। এছাড়া পুষ্টির উন্নয়ন ও নিরাপদ খাবারের ক্ষেত্রে- ভোক্তা, বাজার, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াগত এই চারস্তরেই বিশেষ সচেতনতা আনার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া বৈঠকে দ্বিতীয় ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন অন নিউট্রিশন (২০১৮-২০২৫) বাস্তবায়নে আরও উদ্যোগী, বাস্তবমূখী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের কাছে জোরালো আহবান জানান আলোচনা করা।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা