ব্যাংকিং খাত মানুষকে সেবা দেয়। ব্যাংকাররা সবসময় অর্থনীতিতে অবদান রাখা, মানুষের সঞ্চয়কে রক্ষা করা, তাদের সমৃদ্ধিতে সহায়তা করা এবং তাদেরকে জাতির অগ্রযাত্রায় অন্তর্ভুক্ত করার উপায় খুঁজতে সচেষ্ট থাকেন। তবে তাদের আরও কিছু ভূমিকা থাকে। তারা তাদের ব্যাংকিং দায়িত্বের বাইরে গিয়ে, তাদের ডেস্ক থেকে বেরিয়েও ভালোবাসা ও যত্নের সাথে মানুষের সেবা করেন। তারা সাড়া দেন মানবতার ডাকে। একসাথে তহবিল সংগ্রহ করা এবং দাতব্য সংস্থাগুলোকে অর্থ দেয়ার চেয়ে মহৎ আর কী আছে! এভাবেও তারা মানুষ আর সমাজের সেবা করে থাকেন। ২০১১ সালে ব্র্যাক ব্যাংক দেশে তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে প্রথম ম্যারাথনের আয়োজন করে, যা সব কর্মীদেরকে স্বেচ্ছায় সমাজ কল্যাণমূলক অনুদানের জন্য অনুপ্রাণিত করে। ব্যাংক তার সিএসআর তহবিল থেকে কর্মীদের প্রদানকৃত অর্থের সম পরিমাণ অর্থ দাতব্য সংস্থাকে প্রদান করে। তারপর থেকে প্রতিবছর তারা কোন সময় সংসদের আশপাশে আগারগাঁও এলাকায় এবং হাতিরঝিলে এই ‘দৌড়’-এ আয়োজন করে আসছে। প্রতিবারই সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষেরপাশে দাঁড়ানোর দর্শন তাদের একই থাকে। প্রতিবছরই ব্র্যান্ড এর দর্শন হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির অন্যতম প্রকাশ হিসেবে আবেগ আর অটল দায়বদ্ধতার সাথে তারা এই ‘দৌড়’-এর আয়োজন করে আসছেন। গত ৯ বছরে কর্মকর্তাদের আয়োজিত সিএসআর উদ্যোগের একটি স্বতন্ত্র নজির হয়ে উঠেছে এই ‘দৌড়’। এটি কর্পোরেট একজিকিউটিভ এবং স্বাস্থ্য সচেতন তরুণদেরকে দৌড়ানোর অভ্যাস বিকাশের দিকেও পরিচালিত করেছে। প্রাথমিকভাবে কেবল ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য পরিকল্পনা করা হলেও, ‘দৌড়’ এখন সকলের জন্য উন্মুক্ত, এটি মানুষকে একসাথে যুক্ত করে মানুষেরই সেবার একটি চমৎকার মাধ্যম। সব মিলিয়ে ‘দৌড়’দেশের স্বাস্থ্য সচেতন কর্মকাণ্ডে উৎসাহীদের বর্ষপঞ্জিতেও একটি পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে। দশম স্থানে থেকে একবারের ম্যারাথন শেষ করা একজন অতিথি অংশগ্রহণকারী বলেন: “আমি গর্বের সাথে আমার ‘দৌড়’ ক্রেস্টটি সবাইকে দেখাই এবং বন্ধুদেরকে ব্র্যাক ব্যাংকের স্থাপন করা এই দৃষ্টান্তের গল্পবলি। ‘দৌড়’ মানবিকতার দায় থেকেও বেশি কিছু। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এটি তরুণদের মধ্যে জীবনযাত্রায় বদলের একটি হাওয়া সূচিত করেছে, যারা এখন মূলত ‘দৌড়’-এর সুবাদে দৌড়ানোকে তাদের জীবনের অংশ করে নিয়েছে।” এ-বছরেও, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ হাতিরঝিলে ব্যাংকাররা সকালের কুয়াশা আর শীতকে উপেক্ষা করে মানবতার কল্যাণে দৌড়াবেন। এই সামাজিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে ব্র্যাকব্যাংক দাতব্য সংস্থাগুলোতে ১ কোটি টাকারও বেশি অনুদান দিয়েছে এবং ‘দৌড়’কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আসা এক লক্ষ গরম কাপড় বিতরণ করেছে। দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যান্সার ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর দি এইজেড অ্যান্ড ইনস্টিটিউট অব জেরিয়াট্রিক মেডিসিন, প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন, সুবার্তা ট্রাস্ট, থ্যালাসেমিয়া সমিতি, সিআরপি-সাভার, রাইটস অ্যান্ড সাইট ফর চিলড্রেন, দীপশিখা স্কুল, চেইঞ্জিং ডায়াবেটিস ইন চিলড্রেন- বারডেম ইত্যাদি সামাজিক সংগঠনগুলো ‘দৌড়’ -এর সহায়তা গ্রহণের পর সমাজ কল্যাণ কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়িয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন: “বৃহত্তর ব্র্যাক পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং মূল্যবোধভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা আমাদের ব্যাংকের ডিএনএ-তে দৃঢ়ভাবে খচিত অন্যতম বিষয়। সমাজে অবদান রাখার জন্য আমাদের সহকর্মীদের আবেগ এবং স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে আমিও উৎসাহিত। ‘দৌড়’ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্যোগে আয়োজিত সিএসআর -এর একটি দুর্দান্ত উদাহরণ। আমরা সামনের বছরগুলোতে এই বার্ষিক ম্যারাথনকে আরো নতুন স্তরে নিয়ে যাবো। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এক সাথে আমরা মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারি।” চলুন সবাই ‘দৌড়’-এ যোগ দিই এবং মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসি।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা