প্রত্যেকটি আমলের ভিন্ন ভিন্ন গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। দরুদ পড়া ও সালাম দেয়া একটি উত্তম আমল। এরও ভিন্ন গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে।
স্বয়ং আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ সালাত ও সালাম পেশ করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)
দরুদ পড়ার মাধ্যমে রাসূল সা:-এর দ্বীনের প্রতি ঈমান ও মহব্বত বৃদ্ধি পায়। কুরআনেও দরুদ ও সালাম দেয়ার ওপর তাগিদ দেয়া হয়েছে।
দরুদ ও সালামের ওপর আমল করলে, আল্লাহ তায়ালা আমলকারী ব্যক্তির মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।
হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহপাক তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করবেন। এ ছাড়া তার ১০টি গোনাহ মাফ করা হবে এবং ১০টি দরজা বুলন্দ অর্থাৎ মর্তবা বাড়িয়ে দেয়া হবে। (নাসায়ি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৬)
হজরত আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি ৭০টি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাঁর জন্য ৭০ বার ইস্তিগফার করেন। (মুসনাদ আহমদ, মিশকাত, হাদিস : ৯৩৫)
এ ছাড়া দুনিয়ার জিন্দেগিতে যে যাকে ভালোবাসবে বা মহব্বত করবে, কিয়ামতের দিন তার ভালোবাসার বা পছন্দের মানুষের সাথে হাশর হবে।
কারো যদি ইচ্ছা হয় যে, আমি হাশরের দিন রাসূল সা:-এর সাথে থাকব, তাহলে ওই ব্যক্তিকে দরুদের ওপর আমল করতে হবে।
হজরত ইবনে মাসউদ রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতে আমার নিকটতম ব্যক্তি সেই হবে, যে আমার ওপর অধিক দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৬)
পৃথিবীর যেকোনো স্থানে বসে, যে কেউ দরুদ ও সালাম পড়–ক না কেন, আল্লাহর কুদরতে দরুদ ও সালাম প্রেরণের খবর রাসূল সা:-এর কাছে পৌঁছে যায়।
আল্লাহ তায়ালা এমন কিছুসংখ্যক ফেরেশতা নিয়োজিত করে রেখেছেন, তাদের দায়িত্ব হলো পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে দরুদ ও সালাম প্রেরণের খবর সংগ্রহ করে রাসূল সা:-এর কাছে পৌঁছে দেয়া।
আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা
হজরত ইবনে মাসউদ রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর কতেক ফেরেশতা রয়েছেন, যারা পৃথিবীতে ভ্রমণ করেন এবং আমার উম্মতের সালাম আমার কাছে পৌঁছান। (নাসায়ি, দারেমি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৬)
দোয়া কবুলের আদব হলো দোয়া করার আগে রাসূল সা:-এর ওপর দরুদ পড়া। দরুদ পড়ার গুরুত্ব এতটাই বেশি, যতক্ষণ পর্যন্ত রাসূল সা:-এর ওপর দরুদ পড়া না হয়, ওই ব্যক্তির দোয়া আসমান ও জমিনের মাঝখানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে।
হজরত উমর বিন খাত্তাব রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, দোয়া আসমান ও জমিনের মধ্যে (শূন্যে) অবস্থান করতে থাকে, যতক্ষণ না তোমরা নবীর ওপর দরুদ পাঠ না করো তা ওপরে চড়ে না অর্থাৎ উঠে না। (তিরমিজি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৭)
রাসূল সা:-এর নাম মুবারক যেখানে উচ্চারিত হয়, শুনার সাথে সাথে তাঁর ওপর দরুদ পড়তে হয়। ওই সময়ে দরুদ না পড়লে গোনাহগার হতে হয়।
হজরত আলী রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, কৃপণ ওই ব্যক্তি যার নিকট আমার নাম উচ্চারণ করা হলো অথচ সে আমার প্রতি দরুদ পাঠ করল না। (তিরমিজি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৭)
কুমিল্লায় নির্মিত হচ্ছে ১৮টি মডেল মসজিদ
সালাম অর্থ নিরাপত্তা, শান্তি। এর উদ্দেশ্য ত্রুটি, দোষ ও বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকা। মহানবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম উভয়ই প্রেরণ করতে হবে।
ইমাম নববী বলেছেন, রাসুল (সা.)-এর ওপর যখন কেউ দরুদ পাঠ করে, তখন তার সালামও পেশ করা উচিত। শুধু দরুদ বা সালাম পেশ করে ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়। ফলে ‘আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম’ (তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম) বলতে হবে। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘…হে মুমিনরা! তোমরা নবীর ওপর দরুদ পাঠাও ও সালাম পাঠাও।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)
আমাদের রাসুল ছাড়া অন্য নবী-রাসুল ও ফেরেশতাদের ওপর সালাম পেশ করা মুস্তাহাব। আলেমদের ঐকমত্যে অন্যান্য নবীদের প্রতি দরুদও পাঠ করা যাবে।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা