গিলগিট-বালতিস্তান, যা বর্তমানে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের একটি অংশ। এটি আগে ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মীরের অংশ ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় এটি ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব মানবাধিকারের সর্বোচ্চ ফোরাম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশন চলাকালে এসব তথ্য উঠে আসে।
যুক্তরাজ্যে এশিয়া-ইউরোপ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ব্রায়ান টল বলেন, “আপনার শিক্ষা না থাকলে, আপনি সুশৃঙ্খলভাবে কোনও কাজই করতে পারবেন না। পাকিস্তানে নারী শিক্ষা তেমন উন্নতি হয়নি। এখানকার কর্মক্ষেত্রে নারী কর্মীদের উপস্থিতি খুবই নগন্য। এখানে ৬৫ শতাংশ নারী প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডিই পার করতে পারছে না। আর ২০১৮ সালে শুধু গিলগিট-বালতিস্তানেই নারী শিক্ষার্থীদের ওপর বহু সংখ্যক হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানি তালেবান। কেননা, তারা চায় না নারীরা শিক্ষিত হোক। এর ফলে এখানে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ বেড়েছে। বেড়ে গেছে হত্যার ঘটনা।”
তিনি বলেন, “অতীতের দিকে তাকালে গিলগিট-বালতিস্তান ভারতের বৈধ অংশ ছিল, যা পরবর্তীতে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আগে এটা কখনোই পাকিস্তানের অংশ ছিল না।”
গিলগিট-বালতিস্তানের মানবাধিকার কর্মী সেঙ্গে সেরিং বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর গিলগিট-বালতিস্তান জম্মু-কাশ্মীরেরই অংশ ছিল, যা ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ভাগ্যক্রমে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের কারণে পাকিস্তান জম্মু-কাশ্মীরের একটি অংশ দখলে নেয়। আমরাও (গিলগিট-বালতিস্তান) পাকিস্তান অধিকৃত এই কাশ্মীরের একটি অংশ হয়ে যাই। তখন থেকেই পাকস্তান কোনও ধরনের বৈধ সম্পর্ক ছাড়াই গিলগিট-বালতিস্তান শাসন করছে এবং এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করছে। অথচ স্থানীয় জনগণের চাহিদার প্রতি তাদের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা অজুহাত দেখায় যে, এটি একটি বিরোধপূর্ণ জায়গা। তোমাদের জন্য আমাদের বেশি কিছু করার নেই। এটিই হচ্ছে গিলগিল-বালতিস্তানের সচিত্র বর্ণনা।”
তিনি আরও বলেন, “এখানকার সম্পদ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অথচ স্থানীয় জনগণ বিনিময়ে কিছুই পাচ্ছে না। তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে কোনও রাজনৈতিক অধিকার। বলা হচ্ছে, তোমরা বিরোধপূর্ণ। তাই তোমাদের জন্য কিছু করার সাংবিধানিক অধিকার নেই আমাদের।”
ইউরোপিয়ান ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিটির ৩৯তম সভাপতি হেনরি মালোসে বলেন, “পাকিস্তান হচ্ছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের আখড়া। ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তানের ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “গিলগিট-বালতিস্তানের উচিত ভারতীয় ফেডারেশনের সঙ্গে যোগ দেওয়া। এটা ভারতের অংশই হওয়া উচিত। এখানে মানবাধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন হচ্ছে। জাতিসংগের উচিত পাকিস্তান কর্তৃক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার গিলগিট-বালতিস্তানকে যুদ্ধরত রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা দেওয়া এবং সরাসরি সেখানে হস্তক্ষেপ করা।”
এদিকে, সিন্ধু প্রদেশের পাকিস্তানের মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরে বিশ্ব সিন্ধি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক লাখু লোহানা বলেন, ১৯৭১ সালে টিক্কা খান ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করে বলেছিলেন, আমরা বাংলার জনগণকে চাই না। আমরা বাংলার মাটি চাই।”
“তারা আসলে বাংলার জনগণকে চাইনি, তারা চেয়েছে সেখানকার জমি ও সম্পদ। আজ সিন্ধুতেও একই ঘটনা ঘটছে। তারা সিন্ধুর জনগণকে চায় না। তারা সিন্ধুর মাটি চায়, এখানকার সম্পদ চায়,” যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সৌভাগ্যবান। কারণ, আমাদের রয়েছে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ। বর্তমান পাকিস্তানের ৭২ শতাংশ গ্যাস আসে সিন্ধু থেকে। এছাড়া, চাহিদার ৫৬ শতাংশ তেলও আসে সিন্ধু থেকেই। একমাত্র কার্যকর ও টেকসই বন্দর, যা পাকিস্তানকে বিশ্বের সক্রিয় রেখেছে সেটিও এই সিন্ধুর করাচিতে। তারা এই সব সম্পদই চায়। কিন্তু তারা মনে করে যত দিন সেখানে সিন্ধুর জনগণ রয়েছে, যতদিন তারা আন্দোলন-সংগ্রাম করবে, ততদিন তারা এসব সম্পদ পুরোপুরি পাবে না। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের কূটকৌশল চালাচ্ছে, যাতে সিন্ধুর জনগণ ছাড়াই এসব সম্পদ কুক্ষিগত করা যায়।”
NB:This post is collected from bd-pratidin
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা