ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বুধবার (১৬ অক্টোবর) ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ও খাদ্য মেলা ২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) চত্বরে খাদ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব খাদ্য দিবসের উদ্দেশ্য হলো ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দান করা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান, গ্রামীণ মানুষ, মূলতঃ মহিলা ও কম উন্নত মানুষদের অবদানে উৎসাহ দান, প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া।
তিনি বলেন, আমাদের কর্ম আমাদের ভবিষ্যৎ, পুষ্টিকর খাদ্যেই হবে আকাঙ্ক্ষিত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী- প্রতিপাদ্যটি যথার্থ ও সময়োচিত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ব্যক্তি জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ভবিষ্যৎ গড়তে দরকার ধীশক্তি সম্পন্ন ও অসীম সাহসী নেতা এবং সময়োপযোগী পরিকল্পনা। আর সে পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে দরকার কঠোর পরিশ্রম। এ উপলব্ধি থেকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান জেল থেকে ফিরে এসেই ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার পরিবারের পুনর্বাসন, আর্থিক, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পুনরুজ্জীবিত করার কাজে মনোনিবেশ করেন। তিনি সেসময় দেশের পূনর্গঠনে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কৃষি প্রধান এদেশে কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাত্রা শুরু করেন, যা তার কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অব্যাহত রেখেছেন। কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ এখন দানা জাতীয় শস্য, সবজি, মাছ ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ, সবজি উৎপাদনের তৃতীয়, আলু উৎপাদনে অষ্টম, আম উৎপাদনের সপ্তম। বর্তমান সরকার খাদ্য উৎপাদন ও প্রাপ্যতা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি আমরা পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্যের উপর জোর দিচ্ছি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাই ২০১৬ সাল থেকে দেশের দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে বছরের কর্মভাবকালে পাঁচ মাস প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এটিই হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক খাদ্য নিরাপত্তা বেষ্টনী।
মেলায় সরকারি ও বেসরকারি ৪৬ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থাইল্যান্ডের মাহিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. ভিসিথ চাভাসিট।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু, কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান, এমপি। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফএও বাংলাদেশের প্রতিনিধি মিস্টার রবার্ট ডি সিম্পসন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্ঠি ও খাদ্য বিঞ্জান বিভাগের অধ্যাপক নাজমা শাহীন, আইসিডিডিআরবির সিনিয়ন পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ, কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিজ্ঞানী প্রমুখ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রী বিজ্ঞানী ড. পল রোমানির প্রস্তাবের পর ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিষ্ঠার দিনটিতে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা