অনলাইন ডেস্ক
‘বুধবার দেরি হইয়া গেছিল। লাইনের অনেক পিছনে পইড়া গেছিলাম। দুই ঘণ্টা খাড়াইয়া থাইক্যাও (দাঁড়িয়ে থেকে) তেল-চিনি কিছুই পাইনি। আইজ গাড়ি কখন আসে ঠিক নাই। সকাল সাড়ে ৮টায় আইস্যা ইট দিয়া সিরিয়াল দিয়া দাঁড়াইয়া আছি। একটু কম দামে মালগুলো পাইলে উপকার অয়।’
চলমান লকডাউনের অষ্টম দিন আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টায় রাজধানীর নিউমার্কেটের এক নম্বর গেটের বিপরীত দিকের রাস্তা ও ফুটপাতে একটি ইটের ওপর বসে এসব কথা বলছিলেন রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা মধ্যবয়সী ওসমান আলী।
আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ এলাকার বাসিন্দা নুর হোসেন নামের একজন দিনমজুর বলেন, টিসিবির ট্রাকে প্রতিদিন মাত্র ২০০ জনের পণ্য দেয়া হয়। কিন্তু পণ্য নিতে তিনগুণেরও বেশি মানুষের ভিড় থাকে। তাছাড়া মালামাল নিয়ে ট্রাকটি আসার নির্দিষ্ট সময়ও নেই। করোনার এ সময়ে সরকার যেন বেশি সংখ্যক মানুষের জন্য মালামাল দেয়।
নিউমার্কেটের একটি জুতার দোকানে মাসিক সাত হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন। স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ চার সদস্যের পরিবার। লকডাউনের কারণে দোকান বন্ধ। বেতনও পাচ্ছেন না।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, ওসমান আলী একা নন, টিসিবির ট্রাক কখন আসবে সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য না জানলেও সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কিছু পুরুষ-নারী। লকডাউনের কারণে সকালে রাস্তা ফাঁকা থাকলেও টিসিবির পণ্যের জন্য আগাম লাইনে বিশ-ত্রিশ জন মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
ফুটপাতে অপেক্ষা করা রহিমা বেগম নামে একজন মহিলা জানান, ‘এখনও তো মানুষ কম। একটু পরে বিশাল সিরিয়াল অইবো।’
স্থানীয় আইয়ুব আলী কলোনীর এক বাসিন্দা জানান, তিনি মেসে রান্নার কাজ করেন। মার্কেটের কর্মচারী কয়েকজনের রান্না করে ভালোই রোজগার হতো। কিন্তু লকডাউনে মেসের সবাই গ্রামে চলে যাওয়ায় এখন হাতে টাকা নেই। আগের জমানো টাকা ভেঙে খাচ্ছেন।
করোনা মহামারি ও সারা দেশে চলমান লকডাউনে ভোক্তাদের অপেক্ষাকৃত কম দামে পণ্য দিতে ৫ জুলাই থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়। আগামী ২৯ জুলাই (ঈদুল আজহার ছুটি ব্যতিত) পর্যন্ত পণ্য বিক্রি প্রতিদিন চলবে।
এসব ট্রাক থেকে ক্রেতারা চিনি কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা (একজন সর্বোচ্চ চার কেজি ), প্রতিকেজি মসুর ডাল ৫৫ টাকা (সর্বোচ্চ দুই কেজি ) এবং সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটারে (দুই থেকে সর্বোচ্চ ৫লিটার) কিনতে পারছেন।
টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, মহানগরসহ সারা দেশে টিসিবির ৪৫০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৮০টি ও চট্টগ্রাম সিটিতে ২০টি ট্রাক রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মহানগর ও জেলা শহরেও ট্রাকসেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
বর্তমানে টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে দৈনিক ৬০০-৮০০ কেজি চিনি, ৩০০-৬০০ কেজি মসুর ডাল এবং ৮০০-১২০০ লিটার সয়াবিন তেল বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
fblsk
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২০ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা