অনলাইন ডেস্ক
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে। জনগণ অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমে দুর্বার আন্দোলন করছে। আপনারা অবিলম্বে তপশিল প্রত্যাহার করুন। নির্বাচন স্থগিত করে পদত্যাগ করুন। ফরমায়েশি তপশিলে বাংলাদেশে একতরফা কোনো নির্বাচন হবে না। জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করবে।
আজ শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।রিজভী বলেন, পুলিশের এখন পৌষ মাস আর সাধারণ মানুষের সর্বনাশ। নেতাকর্মীদের আটক করে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার বাণিজ্যের তাণ্ডবের কারণে গ্রাম-গঞ্জ, মফস্বল জনপদে কেউ বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। টাকা দিতে না পারলে মিথ্যা মামলায় জেলখানায় নিক্ষেপ করা হচ্ছে।তিনি বলেন, দেশের জেলখানাগুলোয় বিরোধী দলের নেতাকর্মীতে উপচে পড়ছে। মহাবিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। অনেককে আটকে রেখে মুক্তিপণ নিচ্ছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের না পেয়ে তার স্বজন-আত্মীয়দের আটক করে মারধর করছে। কার্যত দেশে আইনের শাসনের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। গায়েবি মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপি নেতাকর্মীদের এখন দুঃসহ জীবন অতিবাহিত হচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে। তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে দেওয়া হচ্ছে না, ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
রিজভী বলেন, কথায় আছে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। শুক্রবার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামীতে ভোট হবে দিনের বেলায়। এর ফলে প্রকারান্তরে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন গত নির্বাচনে ভোট হয়েছে রাতের বেলায়।
তিনি আরও বলেন, ইতঃপূর্বে সরকারের সঙ্গী রাশেদ খান মেননসহ বহু আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। রাতের অন্ধকারে নৌকায় সিল মেরে বাক্স ভরা হয়েছিল। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে দেশের মানুষের।
রিজভী জানান, শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত সারা দেশ বিএনপির ৩১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই সময় ৭টি মামলায় ৯৭৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘২৮ অক্টোবরের নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার বিএনপির শীর্ষ নেতাদের স্বীকারোক্তি নিয়ে ডিবিপ্রধানের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ ২৮ অক্টোবরের পর নাশকতার যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার সবই সরকারদলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই জড়িত। প্রত্যক্ষভাবে ও বিভিন্ন ফুটেজে তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপি নেতাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি যে, নেতারা ডিবি কার্যালয়ে ওই ধরনের কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। সরকারের বিশ্বস্ত দোসর হিসেবে গোয়েন্দা প্রধান নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। ডিবিপ্রধানের মিথ্যাচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’