বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা গতকাল রাজধানীতে মানববন্ধন করেন। বেলা ১১টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক ঘণ্টা ধরে এ কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সামনে ‘বৃহত্তর আন্দোলনে’র হুঁশিয়ারি দেন। আসামের নাগরিকপঞ্জি সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতিবেশী বন্ধুদেশের আসামের মন্ত্রী ও নেতারা হুমকি দিচ্ছেন, ১৯ লাখ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে তারা ঠেলে বের করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবেন। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, স্বাধীনতার পর কোনো বাংলাদেশি ভারতে যায়নি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ চলছে। সেজন্য রাস্তা সংকুচিত। তাই সব সময় যান চলাচলে ধীরগতি। এর মধ্যে গতকালের মানববন্ধনের কর্মসূচিতে ব্যাপক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি পল্টনের মোড় থেকে সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত সড়কের একপাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, মজিবর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, শিরিন সুলতানা, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরফত আলী সপু, কাজী আবুল বাশার, আহসান উল্লাহ হাসান, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু প্রমুখ বক্তব্য দেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আমিরুল ইসলাম খান আলিম ও শহিদুল ইসলাম বাবুল কর্মসূচি পরিচালনা করেন। প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাথ ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন। দেশবাসীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন-নিজের অধিকার, ভোটের অধিকার ও কথা বলার অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আজকে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।যারা আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। দলমত নির্বিশেষে, সবাই মিলে আমাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য, স্বাধীনতার চেতনাকে সমুন্নত রাখতে আজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। সামনের দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন তৈরি করে এই দানব সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হব ইনশা আল্লাহ।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে পারছে না। কারণ তাদের সেই বৈধতা নেই, তাদের সেই সাহস নেই। তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। দুই বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফেরত পাঠাতে পারেনি। আরেকদিকে আজ গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে বাংলাদেশকে আবার বিপদগ্রস্ত করার জন্য, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য।’ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ, তার ডায়াবেটিস অনেক বেড়েছে, তার আর্থারাইটিস বেড়েছে, তার ঘাড়ের ব্যথা বেড়েছে। তিনি সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না, চলতে পারেন না। হুইল চেয়ারে চলতে হচ্ছে তাকে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। তার অসুস্থতার সুচিকিৎসা করাতে হবে।’ স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া একটি মিথ্যা মামলায় কারাগারে। দেড় বছর হতে চলল আটকিয়ে রাখা হয়েছে। সরকারের প্রভাবের কারণে আদালত মুক্ত মনে কাজ করতে পারছে না। তাই খালেদাকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজপথেই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বেগম জিয়ার মুক্তি অর্জন করতে পারব।’ NB:This post is collected from bd-pratidin.com