সরকারের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবার শীর্ষে উঠে এসেছে দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংক। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন আর্থিক সূচকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাংকটি ১০০ নম্বরের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৯৪ নম্বর অর্জন করেছে; যা রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। নির্ণায়ক মানে এ অর্জনকে ‘অতি উত্তম’ রেটিং দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিশেষায়িত খাতের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ‘অতি উত্তম’ মান অর্জন করলেও তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৩.৪২ শতাংশ। অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে রূপালী প্রায় ৮৫ নম্বর, বাংলাদেশ কৃষিব্যাংক প্রায় ৮৪ নম্বর এবং অগ্রণী প্রায় ৮১ নম্বর অর্জন করে নির্ণায়ক মানে ‘উত্তম’ বলে বিবেচিত হয়েছে। আর ৭০ নম্বরের বেশি স্কোর নিয়ে ‘চলতি মানে’ আছে জনতা, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর সম্পাদিত বার্ষিক কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা (এপিএ) বিষয়ক সভার কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরকারের ঘোষিত নীতি ও কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন ও সরকারি কর্মকাণ্ডে দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা হয়। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩০ জুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন ১৭টি দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে এক বছরের জন্য বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ও পাঁচটি বিশেষায়িত ব্যাংক।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কার্যপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই ১১টি ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সোনালী ব্যাংক। ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চুক্তির বিপরীতে ব্যাংকটির প্রাপ্ত নম্বর ৯৪.৪৫; যার মাধ্যে কৌশলগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রাপ্ত নম্বর ৬৯.৭০ ও আবশ্যিক কৌশলগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের প্রাপ্ত নম্বর ২৪.৭৫ শতাংশ।
বিভিন্ন আর্থিক সূচকে মানসম্মত নম্বর অর্জন করে সোনালী ব্যাংককে শীর্ষে নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন ব্যাংকটির সদ্যোবিদায়ি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। বর্তমানে তিনি রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন।
‘সোনালী ব্যাংক দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মনেপ্রাণে চেয়েছি ব্যাংকটিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে। এ জন্য গত তিন বছর সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও আমি বিশ্রাম নিইনি, কাজ করেছি। বিশেষ করে ব্যাংকের যুবশক্তিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি, তাদের নানাভাবে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছি। প্রতিবছর বিভিন্ন সূচকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করেছি। বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠিয়েছি।’ সভার কার্যপত্র বিশ্লেষণে আরো দেখা যায়, সোনালী ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১০৪ শতাংশ। এসএমই ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯০ শতাংশ। অন্যান্য বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১৪০ শতাংশ। শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হ্রাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১০৩ শতাংশ।
শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে নগদ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১১৩ শতাংশ। পরিচালন মুনাফা অর্জনেও রেকর্ড করেছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা অর্জনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১২৭ শতাংশ। এ ছাড়া লোকসানি শাখার সংখ্যা হ্রাসে অর্জনের হার ৩২৮ শতাংশ।
এদিকে রূপালী ব্যাংকের কৃষিঋণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১০৩ শতাংশ, এসএমই ঋণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯৪ শতাংশ, অন্যান্য বিনিয়োগে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১২৪ শতাংশ, শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে নগদ আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৫১ শতাংশ, পরিচালন মুনাফায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭০ শতাংশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কৃষিঋণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১০১ শতাংশ, এসএমই ঋণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১০৩ শতাংশ, অন্যান্য বিনিয়োগে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১১৩ শতাংশ, শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে নগদ আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯১ শতাংশ, পরিচালন মুনাফায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯৩ শতাংশ ও লোকসানি শাখা হ্রাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১৩০ শতাংশ।
এ ছাড়া জনতা ব্যাংকের কৃষিঋণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১০০ শতাংশ, এসএমই ঋণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯৩ শতাংশ, অন্যান্য বিনিয়োগে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৫৬০ শতাংশ, শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে নগদ আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ১৪৩ শতাংশ।
NB:This post is collected from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা