আদালতে মিন্নির দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক গত সোমবার সংবাদ প্রকাশ করে। সাংবাদিকরা বিষয়টি জানার জন্য ওই দিন পুলিশ সুপারের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে দেখা করেন। পুলিশ সুপারের কাছে সাংবাদিকরা মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি সম্পর্কে জানতে চান। তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তাধীন মামলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রকাশের সুযোগ নেই। যদি প্রকাশ পায় তাহলে মামলার তদন্তে সমস্যার সৃষ্টি হবে। তখন সাংবাদিকরা জানতে চান, একটি দৈনিক মিন্নির জবানবন্দি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তারা কিভাবে তথ্য পেল? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কপি পুলিশের পাশাপাশি আদালতে রক্ষিত থাকে। পুলিশের কোনো কর্মকর্তা ওই জবানবন্দির কপি কাউকে সরবরাহ করেননি। এমনকি ওই পত্রিকাটি কোথা থেকে জবানবন্দির কপি পেয়েছে তাও তিনি জানেন না।
পুলিশের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৫ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মিন্নির রিমান্ড শুনানির সময় আদালতে পুলিশ দুটি বিষয় উপস্থাপন করেছিল। একটি হলো মিন্নির সঙ্গে আসামিদের কথোপকথনের মোবাইল কল লিস্ট। অন্যটি আদালতে দেওয়া আসামি টিকটক হূদয়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নি জড়িত বলে টিকটক হূদয় জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরগুনার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
মিন্নির জামিন শুনানির দিন আদালত সূত্রে দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মিন্নির সম্পৃক্ততার কথা সংবাদমাধ্যমে এসেছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শুধু দুই আসামির নাম বলেছেন। কিন্তু মিন্নি খুনের সঙ্গে কিভাবে জড়িত তা তিনি সাংবাদিকদের জানাননি।
গত ২৬ জুন রিফাত শরীফকে দিনদুপুরে শত শত লোকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই দিন রাতেই ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন তাঁর বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। মামলায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে এক নম্বর সাক্ষী করা হয়। এরপর গত ১ জুলাই থেকে গ্রেপ্তারকৃতরা আসামিরা একের পর এক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু সেই সব আসামির জবানবন্দি প্রকাশ হয়নি। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সেই জবানবন্দি প্রকাশ হওয়ার কথাও না। কিন্তু মিন্নিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে তাঁর দেওয়া ১৬১ ধারার জবানবন্দি একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর আদালতে ১৬৪ ধরায় মিন্নির দেওয়া জবানবন্দি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। ওই দৈনিকটি কোন সূত্র থেকে জবানবন্দির কপি পেয়েছে, তা উল্লেখ করেনি।
এ ব্যাপারে মিন্নির পরিবার প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলছে, যারা প্রকাশ্যে রিফাতকে কোপাল, তারাও জবানবন্দি দিয়েছে। সেটি সংবাদমাধ্যমে না এসে কেন ঘুরেফিরে তাঁদের মেয়ের (মিন্নি) জবানবন্দি প্রকাশ হচ্ছে? কারাই বা এই জবানবন্দি সংবাদমাধ্যমকে সরবরাহ করছে? শুধু তা-ই নয়, নয়নের বাসা থেকে মিন্নির ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার নিয়ে তাঁর পরিবার প্রশ্ন তুলেছে।
NB: This post is copied from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা