জাতীয় নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করে পুরোনো অনেক বাঘা-বাঘা মন্ত্রীদের বাদ দিয়ে চমক নিয়ে চলতি বছরের শুরুতে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দায়িত্বের প্রথম বছরে নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে আলোচনায় ছিলেন তাদের বেশ কয়েকজন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি:
বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় রয়েছেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে অস্থির হয়ে ওঠা পেঁয়াজের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বাণিজ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতা রয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই।
নিজ দেশে উৎপাদন কম হওয়ায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। ফলে দুদিনের মধ্যে দেশের বাজারে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা ছাড়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম। ভারতীয় পেঁয়াজও বিক্রি হতে থাকে ১০০ টাকার কাছাকাছি দরে।
তখন বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম সহনশীল পর্যায়ে আসবে। মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কয়েকদিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিকেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে, পদত্যাগের আহ্বানসহ বিভিন্ন মহল থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বগুড়ায় কাউন্টডাউন মেশিন স্থাপন
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক:
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের দালাল আইনে মামলা করা হয়েছিল তাদেরকে রাজাকার আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্য হিসাবে চিহ্নিত করে গত ১৫ ডিসেম্বর ১০ হাজার ৭৮৯ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ওই দিন মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে এ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে। এটি পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হতে থাকবে।’
কিন্তু রাজাকারের এ তালিকা প্রকাশের পর গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। যার প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর পদত্যাগসহ নানা দাবিতে মানববন্ধন করে বিভিন্ন সংগঠন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক:
ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে সারা দেশে যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, ঠিক সে সময়েই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘বিতর্কিত’ বিদেশ সফর নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
গত ২৮ জুলাই সপরিবারে মালয়েশিয়া যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ৪ আগস্ট তার দেশে ফেরার কথা থাকলেও, সমালোচনার মুখে সফর সংক্ষিপ্ত করে গত ৩১ জুলাই ঢাকায় ফেরেন তিনি।
ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যে জাহিদ মালেক কেন বিদেশ সফরে গেলেন তা নিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি আলী আশরাফ ও প্রয়াত সংসদ সদস্য মঈনউদ্দীন খান বাদল। জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে তখন সমালোচনার ঝড় ওঠে।
২০১৯ সালের সেরা ১০ স্মার্টফোন
রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে ১৭ জনের প্রাণহানি ও অর্ধশতাধিক আহতের পর রেলের অব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রেলমন্ত্রীর সমালোচনা শুরু হয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের:
গত ৩ মার্চ গভীর রাতে শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এনজিওগ্রামের পর তার হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। তাকে হাসপাতালে দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। তখনও কাদের ছিলেন অচেতন। পরে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে একটি বিশেষ বিমানে করে বাংলাদেশে আসেন ভারতের প্রখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন দেবী শেঠি।
দেবী শেঠির পরামর্শেই ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে ৪ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে মন্ত্রীকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত ২০ মার্চ সেখানে তার বাইপাস সার্জারি করা হয়। প্রায় ১৫ দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন কাদের। দীর্ঘ আড়াই মাসের চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে গত ১৫ মে দেশে ফিরেন তিনি।
Like & Share our Facebook Page: Facebook
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা