চেলাইস স্কোলস। ৩৭ বছর বয়সী এই নারী বর্তমানে মৃত্যুশয্যায় রয়েছেন। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে তাকে তার নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য তহবিল সংগ্রহে নামতে হয়েছে।
দুই বছর আগে চেলাইস স্কোলসের মা হৃদরোগ এবং স্তন ক্যান্সারের কারণে মারা যান। মায়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে স্কোলস তার নিজের ১০০০ ডলারের ক্ষুদ্র জীবন বীমা পলিসির অর্থ খরচ করেছিলেন।
সে সময় স্কোলসের বয়স ছিল ৩৫। তখন তিনি ভেবেছিলেন, নতুন একটি জীবন বীমা পলিসি কিনতে তার হাতে যথেষ্ট সময় রয়েছে। দুঃখজনকভাবে তার ধারণা ভুল ছিল।
ওই ঘটনার প্রায় এক বছর পরে, ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে অস্বাভাবিক রক্তপাতের কারণে স্কোলসের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়ল। পরীক্ষায় ধরা পড়ল যে, সার্ভিকাল ক্যান্সার তার লিভারে ছড়িয়ে পড়েছে। ডাক্তার জানালেন, ভাগ্য ভালো হলে তিনি বড়জোর আর ছয় মাস বেঁচে থাকতে পারবেন।
এ বিষয়ে স্কোলস বলছেন, এটা ছিল খুবই বেদনাদায়ক এবং ভীতিকর বিষয়। আমি সম্পূর্ণ একা। কোনো ভাইবোন নেই আমার।
হেলথ কেয়ার কল সেন্টার চাকুরী করেন তিনি। তার কোনো সঞ্চয় এবং জীবন বীমাও নেই। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিশাল খরচ তার দাদা এবং ফুফুকে বহন করতে হবে, এটা ভেবে দু:শ্চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যয়বহুল। আমি চাই না আমার পরিবারের সদস্যদের এই বোঝা বহন করতে হোক।
গত মে মাসে তার নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অর্থ সংগ্রহে একটি আইডিয়া পেলেন স্কোলস। তিনি ফেসবুকে একটি পোস্টে ৪ ডলারে রিষ্টব্যান্ড বিক্রির ঘোষণা দিলেন। হ্যাশট্যাগ করলেন ‘ক্রেজিস্ট্রোট্রং’ নামে।
স্কোলসের বেস্টফ্রেন্ড প্যারিস গ্রিন এই আইডিয়াটি জুন মাসে একটি গোফান্ডিম নামের একটি ফেসবুক পেইজে শেয়ার করেন। এখানে তিনি স্মরণসভা সংক্রান্ত কাজের জন্য ১০০০০ ডলার সংগ্রহের প্রত্যাশা করেন।
সেদিনের মধ্যে (যেদিন পোষ্ট দেওয়া হলো) এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া তহবিল প্রত্যাশিত সংখ্যাটি অতিক্রম করবে।
স্কোলস বলেন, আমি পরদিন সকালে জেগে উঠে দেখি, লোকেরা ১০০০ ডলারেরও বেশি দান করেছে। তার পরের দিন, আমি বিস্ময়াভিভূত হয়ে দেখতে পাই, এটি ১০০০০ ডলারের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে। আমার কাছে এটা অবিশ্বাস্য লাগছিল।
ফেসবুকে, গোফান্ডমি পেইজ এবং শিকাগো মিডিয়াতে কিছু মানুষের মন্তব্য দেখে স্কোলসের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েছিল।
কমেন্টে একজন নারী লিখেছিলেন, আমি নিশ্চিত যে আপনার মা আপনার অদম্য শক্তিতে গর্বিত।
আরেকজন লিখলেন, ক্যান্সার খুবই বিশ্রী কিন্তু আপনি খুবই সুন্দর!
তৃতীয় ব্যক্তি লিখলেন, নিজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়ে কারোই দু:চিন্তা করা উচিত নয়।
স্কোলস হাজার-হাজার মানুষের চিঠি তার বাড়ীতে এসেছে, যাদের কাউকেই তিনি চেনেন না।
গোফান্ডমি তহবিলে ২৮০০০ ডলারেরও বেশি অর্থ সংগৃহীত হয়েছে। তার রিষ্টব্যান্ডের মূল্য উঠেছে ১০০০ ডলারেরও বেশি। এর মধ্যে ১৫০০০ ডলার ব্যয় হবে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রিপেইড খরচ। বাকি অর্থ ব্যয়ে আগামী মাসে তাকে উইসকনসিন ডেলসের আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা করতে পাঠানো হবে। তিনি হুইলচেয়ারে ওই এলাকা ঘুরে বেড়াবেন।
তার শেষ ইচ্ছা হলো, জীবদ্দশার বাকি দিনগুলোতে ক্যান্সার মোকাবেলায় অন্যদের সাহায্য করা।
স্কোলস বলেন, আগামী কয়েক মাসে আমি বাকি অর্থ যত বেশি সম্ভব মানুষকে খুশি করে তুলতে খরচ করতে চাই।
তিনি স্থানীয় ক্যান্সার কেন্দ্রে কয়েক হাজার ডলার দান এবং সাহায্য করার পরিকল্পনা করেছেন।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমি বিল পরিশোধে অক্ষম এক লোক সাহায্য করেছি।
স্কোল জানান, তিনি এটা জেনে অবাক হয়েছেন যে, প্রতি বছর ১৩০০০ নারী সার্ভিকাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
NB:This post is copied from kalerkantho
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা