প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য আট দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএ ৭৪তম বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
আবুধাবিতে একদিনের যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইটটি রোববার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে আবুধাবি থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করে। প্রধানমন্ত্রী রোববার বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন।
বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে শুক্রবার বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে আবুধাবির উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে কো-চেয়ার হিসেবে জাতিসংঘ ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলে (ইসিওএসওসি) ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বহুপাক্ষিক প্যানেল বৈঠক পরিচালনা করবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী অছি পরিষদে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে বক্তব্য দেবেন এবং ‘রিকগনাইজিং পলিটিক্যাল লিডারশিপ ফর ইম্যুনাইজেশন ইন বাংলাদেশ’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের কেনেডি রুমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। শেখ হাসিনা ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স ফর ডেভেলপমেন্টের জাতিসংঘ মহাসচিবের স্পেশাল অ্যাডভোকেট কুইন মেক্সিমার সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় অংশ নেবেন।
তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও ওআইসি সচিবালয় আয়োজিত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের অবস্থার ওপর একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দেবেন। শেখ হাসিনা ‘লিডারশিপ ম্যাটার্স-রিলেভেন্স অব মহাত্মা গান্ধী ইন দ্য কনটেম্পোরারি ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ ছাড়া তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২৫ সেপ্টেম্বর ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিলে টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি সম্মেলন) ওপর উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামে ‘লোকালাইজিং দ্য এসডিজিস’-এ প্রধানমন্ত্রী কো-মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সে ‘এ কনভারসেশন উইথ অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন। একইদিন তিনি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সবার জন্য স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটারের সভাপতি কেভিন রাডের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ হাউসে একটি নৈশভোজে অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৬ সেপ্টেম্বর ইক্সোনমোবিল এলএনজি মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ইনকর্পোরেটেডের চেয়ারম্যান এলেক্স ভি. ভলকোভ, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বিল গেটস এবং আইসিসি প্রোসিকিউটর ফাতোউ বেনসোউদার সঙ্গে বৈঠক করবেন। শেখ হাসিনা একইদিন ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। এ ছাড়াও তিনি ইউনিসেফ আয়োজিত ‘এক ইভেনিং উইথ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
২৭ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ : কমপ্রিহেনসিভ প্রাইমারি কেয়ার ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিজএবিলিটিজ’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। একইদিন তিনি জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনের ৭৪তম বার্ষিক সাধারণ বিতর্কে বক্তৃতা দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে প্রেস ব্রিফিং করবেন। এ ছাড়া তিনি নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। জাতিসংঘ সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন।
প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিনেশন ও যুব দক্ষতা উন্নয়নে বাংলাদেশের সাফল্যের জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করবেন। টিকা প্রদানে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার দেবে গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গাভি)। এ ছাড়া ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ শীর্ষক পুরস্কারে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মানিত করা হবে। এই পুরস্কার প্রদানের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান জানানোর জন্য এক সন্ধ্যা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকা, ওয়াশিংটন পোস্ট ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকেও সাক্ষাৎকার দেবেন।
২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। ৩০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৮টায় শেখ হাসিনা আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি বিমানে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ১ অক্টোবর ভোরে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বাসস।
পরবর্তী মন্তব্যের জন্য আপনার নাম,ইমেইল,ওয়েবসাইট ব্রাউজারে সংরক্ষণ করুণ
সম্পাদকঃ
বিডিবিএল ভবন ( লেভেল - ৮) ১২ কারওয়ান বাজার সি/এ, ঢাকা, বাংলাদেশ।
কপিরাইট © ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই লালসবুজের কথা